• মঙ্গলবার , ২১ মে ২০২৪

‘মোবাইল চুন্নি’ বেঁধে নির্যাতন-


প্রকাশিত: ৭:৩৯ পিএম, ১০ মে ২৪ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১ বার


বোদা প্রতিনিধি : ‘মোবাইল চুন্নি’ বলে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে এক নারীকে। ঘটনাটি ঘটেছে, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায়। এলাকাবাসি জানায়, একটি মুঠোফোন চুরির অভিযোগে ২৬ বছর বয়সী এক নারীর কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার একটি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দুই শিশু সন্তানের মা। পারিবারিক কলহের জেরে ওই নারী বেশ কিছুদিন ধরে ভ্যানচালক বাবার বাড়িতে থাকছিলেন।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ১২ সেকেন্ড এবং ৪৯ সেকেন্ডের দুটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যানে বোরকা পরা এক নারীকে জোর করে বসিয়ে দিচ্ছেন কয়েকজন নারী। ওই নারীর মাথার চুলগুলো এলোমেলো। এ সময় ওই নারীর সঙ্গে তর্ক করছিলেন অপর কয়েকজন নারী। এর মধ্যে কমলা রঙের টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি ওই নারীর কোমরে দড়ি দিয়ে বাঁধছেন। চারদিকে বিভিন্ন বয়সের অনেক নারী-পুরুষ ভিড় করে আছেন। ভুক্তভোগী ওই নারী হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। পরে ভ্যানটিতে ওই নারীর তিন পাশে আরও তিন নারী বসে চলে যান।
তর্কে জড়ানো এবং দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে যাওয়া ওই নারী-পুরুষদের দাবি, ওই নারী তাঁর এক দাদির (বাবার খালা) বাড়ি থেকে মুঠোফোন চুরি করে নিয়ে আসায় তাঁকে এভাবে বেঁধে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

নির্যাতনের শিকার ওই নারীর ছোট বোন দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, তাঁরা গরিব মানুষ। বাবা ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। তাঁরা মানুষের কাজ করেন। অস্ত্রোপচারে (সিজারে) বোনের দ্বিতীয় সন্তান জন্মের পর থেকেই তাঁর বোন এলোমেলো হয়ে গেছেন। তিনি শুনেছেন, তাঁর বোন গতকাল বাবার খালার বাড়িতে গিয়ে তাঁদের একটি বাটন মোবাইল ফোন নিয়ে এসেছেন। এ ঘটনায় তাঁর বাবার খালার ছেলেসহ কয়েকজন নারী এসে তাঁর বোনকে দড়ি বেঁধে নিয়ে গেছেন। তাঁর বোনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনও করা হয়েছে। এখন তাঁর বোন বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না। তিনি এই ঘটনার বিচার চান।

স্থানীয় ওষুধের ব্যবসায়ী মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তিনি হঠাৎ বেশ কিছু লোকজনের চিৎকার শুনতে পান। কাছে গিয়ে দেখেন, এক নারীকে মারধর করে ভ্যানে তুলে দড়ি দিয়ে বাঁধা হচ্ছে। যে লোক ওই নারীকে দড়ি দিয়ে বাঁধছিলেন, তিনি চার-পাঁচজন নারী নিয়ে এসেছেন। কেন এ রকম করা হচ্ছে, জানতে চাইলে তাঁরা জানান, ওই নারী মোবাইল চুরি করেছেন। ওই নারীকে নির্যাতনের প্রতিবাদ করেও তিনি ব্যর্থ হন। তাঁদের বাধা উপেক্ষা করে তিনি ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। পরে তিনি ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাহেব আলী বলেন, এক নারী মোবাইল চুরি করেছেন বলে জানিয়ে গতকাল ফোন করে তাঁকে ঘটনাস্থলে ডাকা হয়েছিল। তিনি ব্যস্ততার কারণে সেখানে যেতে পারেননি। ওই নারীকে মারধর করা হয়েছিল কি না, সেটা তিনি জানেন না।

বোদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক দৈনিক সত্যকথা প্রতিদিন কে বলেন, ভিডিওটি তাঁরা ফেসবুকে দেখেছেন। বিষয়টি তদন্তে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। খোঁজখবর নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।