• শনিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৪

৭ নম্বর বিপদ সংকেত চট্টগ্রাম কক্সবাজারে-আসছে ঘূর্ণিঝড় ‌‌”মোরা”


প্রকাশিত: ২:৩৬ পিএম, ২৯ মে ১৭ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১১৭ বার

বিশেষ প্রতিনিধি  :  ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ আরও উত্তর দিকে সরে বাংলাদেশ উপকূলের ৪৫০ কিলোমিটারের মধ্যে চলে Mora-www.jatirkhantha.com.bdআসায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়াঅধিদপ্তর। উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো এই সংকেতের আওতায় থাকবে।

এছাড়া পায়রা ও মোংলা বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। এই সংকেত ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতেও প্রযোজ্য হবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ জাতিরকন্ঠকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোরা আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হওয়ার পর মঙ্গলবার ভোরে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের মানে হল, সাগরে মাঝারী শক্তির একটি ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে আসছে, যেখানে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়টি সমুদ্রবন্দরের খুব কাছ দিয়ে অথবা উপর দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে৷Mora-www.jatirkhantha.com.bd1

তিনি বলেন, ৫ নম্বর বিপদ সংকেতের মাত্রা ৭ নম্বরের সমান, তবে দিক ভিন্ন। অর্থাৎ, সরাসরি পায়রা ও মোংলার দিকে না এসে ঘূর্ণিঝড়টি পূর্ব দিক দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে এই দুই বন্দরকে ৫ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়ার সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, সোমবার সকাল ৯ টায় চট্টগ্রাম থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম, কক্সবাজার থেকে ৪৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম, মোংলা থেকে ৫৮০ কিলেমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১০ দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল মোরা। ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলার এবং সমুদ্রগামী জাহাজকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় উপকূলীয় জেলাগুলোতে ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সঙ্গে থাকতে পারে অতি ভারি বর্ষণ। নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর প্রথম ১২ ঘণ্টায় তা ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে উত্তর দিকে এগিয়ে এসেছে। আর তারপর সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৩ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করেছে আরও ৪৫ কিলোমিটার পথ।

ভারতের আবহাওয়া দপ্তর বলছে, সোমবার বিকাল নাগাদ মোরা তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম, যা ক্যাটাগরি ওয়ান হারিকেনের সমতুল্য) রূপ নিতে পারে। মঙ্গলবার সকাল নাগাদ উপকূল অতিক্রম করার সময় বাতাসের বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার, যা ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।

এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বিপুল পরিমাণ বৃষ্টি (৩০০ মিলিমিটার) ঝরাতে পারে বলে আভাস দিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে একুওয়েদার। গত ২৬ মে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর রোববার সকালে তা নিম্নচাপে এবং মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেয়।

এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আট দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী তখন এর নাম দেওয়া হয়ে ‘মোরা’ (MORA)। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জাতিরকন্ঠকে জানান, ‘মোরা’ থ্যাইল্যান্ডের প্রস্তাবিত নাম।নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেওয়ার পরপরই ৯টায় বিপদ সংকেত জারি করে আবহাওয়া অফিস।

সর্বশেষ গত ১৫ এপ্রিল সকালে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয় এবং পরদিন তা ঘূর্ণিঝড় ‘মারুথা’য় রূপ নেয়। পরে সেটি দক্ষিণপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করে।