• শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

সংকট সমাধানে নিজেদেরকেই উদ্যোগ নিতে হবে-২৮ দেশের রাষ্ট্রদূত


প্রকাশিত: ৬:০৩ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৫ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৯ বার

khaleda_hasian-www.jatirkhantha.com.bdপ্রিয়া রহমান.ঢাকা: বাংলাদেশে চলমান সঙ্কটের সমস্যা সমাধানে ২৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকেরা বলেছেন, সংকট সমাধানে নিজেদেরকেই উদ্যোগ নিতে হবে। তারা বলেছেন, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী সুশিল সমাজের প্রতিনিধিসহ সমাজের সব স্তরের মানুষকেই এ সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে।

বুধবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এফবিসিসিআই’র সঙ্গে দাতা সংস্থার প্রতিনিধি এবং কূটনৈতিকদের বৈঠকে তারা এ আহ্বান জানান। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরতে এ বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

বৈঠকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট বলেছেন, চলমান সঙ্কটের সমধান নিজেদেরকেই করতে হবে। এজন্য ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী সুশিল সমাজের প্রতিনিধিসহ সমাজরে সব স্তরের মানুষকেই এ এগিয়ে আসতে হবে।

কানাডার রাষ্ট্রদূত বিনোয়েট পিয়ারে লারামি বলেন, বিরোধীদলকে রাজনীতি করার সুযোগ দিতে হবে। পাশাপাশি সহিংসতা থেকে সব পক্ষকে সরে আসতে হবে। সংঘাত অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। সমঝোতার মাধ্যমে চলমান সঙ্কট নিরসন করা সম্ভব।জাপানি রাষ্ট্রদূত শিরো সাদোশিমা বলেছেন, বিভাজন কোন সমাধান নয়। সমস্যা সমাধানে উভয় পক্ষকেই নমনীয় হতে হবে।

সমাবেশে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছিলো ঠিক তখন কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সহিংস কর্মসূচীর কারণে সেই অগ্রযাত্রা ব্যহত হচ্ছে। চলতি বছরের শুরু থেকে চলমান সহিংসতায় জাতীয় অর্থনীতি ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই সময়ে অনেক সম্পদ ও কর্মসংস্থানের ক্ষতি হয়েছে। ঢাকাকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করার উদ্দেশ্যে একটানা হরতাল ও অবরোধের কারণে উৎপাদন ও সরবরহ লাইন ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হবে বলেও তিনি কুটনৈতিকদরে আশ্বস্ত করেছেন।

তিনি বলেন, গত ৪৪ দিনের হরতাল ও অবরোধে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। শিশু সহ ৮৮ জন সাধারণ মানুষ মারা গেছে। ২০০ মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। ৫ হাজার যানবাহনে আগুন দেয়া হয়েছে। চলমান পরিস্থিতির কারণে আমদানি-রপ্তানি ব্যহত হচ্ছে। নিত্যপণ্য সরবরহ ব্যবস্থায় সংকট দেখা দিয়েছে। দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক সবাই বেকার হয়ে পড়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে হরতাল ও অবরোধের মধ্যেও আমাদের কারখানা সচল রয়েছে।

বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরে কাজী আকরাম বলেন, গত এক দশক ধরে ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। মূল্যস্ফিতি এক অংকের ঘরে রয়েছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন, স্থিতিশীল এক্সচেঞ্জ রেট, নি¤œমুখী মুল্যস্ফিতি, অভ্যন্তরিণ চাহিদা ভালো ছিলো। গোটা অর্থনীতি গত কয়েক বছর ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলো।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের উন্নতির বড় বাধা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে তা আমরা জয় করতে পেরেছি। এখন আমাদের মানব সৃষ্ট এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। মানবসৃষ্ট এই দুর্যোগ খুব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারবো। একই সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যক্রম দ্রুত সচল হবে বলে তিনি মনে করেন।

বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান ও ভারতসহ প্রায় ২৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।