• বৃহস্পতিবার , ২৫ এপ্রিল ২০২৪

১৩৭ বছরের ইতিহাসে সাকিব রেকর্ড-একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট


প্রকাশিত: ৩:০৯ এএম, ৮ নভেম্বর ১৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯৭ বার

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

টিপু বিশ্বাস.ঢাকা:

‘সাকিব, সাকিব, সাকিব…

পড়ন্ত দুপুর।

মুশাঙ্গুয়ের ব্যাট ছুঁয়ে বল

মুশফিকের গ্লাভসে আশ্রয়………….

গ্যালারিতে গগনবিদারী চিৎকার, ‘সাকিব, সাকিব, সাকিব…।’ ওই আউটেই পূর্ণ হয়েছে ম্যাচে সাকিবের ১০ উইকেট। নাম উঠে গেছে ইতিহাসেও।

সেঞ্চুরি করেছিলেন আগেই। ১৩৭ বছরের ইতিহাসে ২৭৭০ জন ক্রিকেটারের পদচারেণ সমৃদ্ধ হয়েছে টেস্ট ক্রিকেট। কিন্তু রেকর্ড বইয়ের একটি পাতায় নাম ছিল শুধু দুজনের। একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট। সেখানে এখন তিনজনের নাম। ইয়ান বোথাম ও ইমরান খানের পাশে সাকিব আল হাসান!

 

মাঠ মাতালেন, নাচালেন গ্যালারি। সেটি আরও বেড়ে গেল বাংলাদেশ দলের জয়ে। খুলনা টেস্টটা বাংলাদেশ জিতে নিয়েছে ১৬২ রানে। চট্টগ্রাম টেস্ট হাতে রেখেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত হলো।
ssssssssssssssssssssssতাতে বড় অবদান রাখলেন সাকিব। ম্যান অব দ্য ম্যাচের নাম যখন ঘোষণা করা হলো কাল, আরেকবার ‘সাকিব, সাকিব’ চিৎকারে প্রকম্পিত চারপাশ। একটু দূরে দাঁড়িয়ে, মাথা ঘুরিয়ে গ্যালারিতে তাকালেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেলর। দেখলেন সাকিবের জনপ্রিয়তা।

সংবাদ সম্মেলনেও সাকিব হাসলেন, হাসালেন। কোচের কণ্ঠে সাকিব স্তুতি। প্রধান নির্বাচক বলছেন, সাকিব বাংলাদেশের ক্রিকেট ছাড়িয়ে অন্য উচ্চতার একজন। ‘নিষিদ্ধ’ সেই সাকিব কাল উৎসবের মধ্যমণি।
অথচ এই ম্যাচ তাঁর দেখার কথা ছিল বাড়ির ড্রয়িংরুমে বসে, টিভিতে। কিংবা হয়তো দেখতেনই না! এখনো তাঁর নিষিদ্ধ থাকার কথা ছিল, মেয়াদ ছিল আরও দুই মাস। ঠিক কোন বা কোন কোন ‘বাজে আচরণে’ সাকিবকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, সেটা এখনো জানা যায়নি। তবে সেই অজানা বাজে আচরণে ‘উন্নতি হয়েছে’ জানিয়ে গত আগস্টে কমানো হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

এটি আদতে ছিল কাপড়ে মোড়ানো আচ্ছাদন, আসল কারণটি বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। বাংলাদেশ ক্রিকেটের বছরজুড়ে চলা দুঃসময় আরও দীর্ঘায়িত হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে। হাঁসফাঁস করতে থাকা এই দলের তাই প্রয়োজন ছিল অক্সিজেন। সাকিব অনেক দিন থেকেই বাংলাদেশ দলের অক্সিজেন। পারফর্ম করুন আর নাই করুন, সাকিবের উপস্থিতিই দলকে করে চনমনে, এনে দেয় বাড়তি মাত্রা।
আর সাকিব পারফর্ম করছেন না, এই কথাটিই বা কতবার উচ্চারিত হয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারে! সাকিব আসলেই উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। ধরাবাহিকতার চূড়ান্ত উদাহরণ। নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা কাটিয়ে ফিরে প্রথম টেস্টেই নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টে সেঞ্চুরি ও ১০ উইকেটের ইতিহাস। ব্রেন্ডন টেলর বলছেন, ‘ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার জন্য একজন সাকিবই যথেষ্ট।’

মুশফিকুর রহিম বলছেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমি ভাগ্যবান যে সাকিবের মতো একজন পারফরমার পেয়েছি।’ আর সাকিব? ‘দলের হয়ে, দলের জয়ে অবদান রাখাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে।’

এই চেষ্টা, এই পথচলাতেই ধরা দিচ্ছে ছোট-বড় অর্জন, দারুণ সব কীর্তি। কালকেরটি নিঃসন্দেহে সবকিছুর ওপরে। সাকিব নিজেও এটিকে বলছেন নিজের সেরা। সঙ্গে অবশ্য যোগ করেছেন, ‘আরও ভালো করতে পারি!’
এখানেই সাকিব ‘স্পেশাল’। ইমরান-বোথামের পাশে বসে গর্বিত, কিন্তু দৃষ্টি আরও অনেক দূরে। তাঁর আকাশ অনেক বড়!