• বৃহস্পতিবার , ২৮ মার্চ ২০২৪

হেফাজত নেতা আল্লামা শফীকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখছেন


প্রকাশিত: ২:৩৭ এএম, ১০ জুন ১৭ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৩ বার

বিশেষ প্রতিনিধি :  হেফাজত নেতা আল্লামা শফীকে আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখছেন। সর্বশেষ গত রাতে খোঁজ নিয়ে জানা allama shafi-www.jatirkhantha.com.bdগেছে, হেফাজতে ইসলামের আমির ও হাটহাজারী দারুল উলুম মুইনুল ইসলামের (হাটহাজারী বড় মাদ্রাসা) মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফীর শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন।

তাকে কোনো ধরনের ওষুধ দেওয়া যাচ্ছে না। তিনি নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বিদেশ নেওয়ার অনুমতি চাইলেও চিকিৎসকরা সে অনুমতি দেননি। তার বয়স এখন ৯৬ বছর।

রাজধানী ঢাকার গে-ারিয়ায় আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শাহ আহমদ শফী। চিকিৎসকরা বলেছেন, আহমদ শফীর জ্ঞান আছে, তবে তার স্মৃতিভ্রম হয়েছে। তিনি কাউকে চিনতে পারছেন না। তার প্রস্রাবের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। নিউমোনিয়ার প্রকোপও রয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকে তার শরীরে জ্বর অনুভূত হচ্ছে। এ কারণে তার চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। দুই সন্তান মোহাম্মদ ইউসুফ ও আনাস মাদানী ছাড়া অন্য কাউকে তার কক্ষে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাকে রাখা হয়েছে।

আল্লামা শফীকে গত ৬ জুন আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন ৭ জুন হাসপাতাল থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হয়। ডা. এ আর এম নুরুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাহ আমহদ শফী ইউরিন সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। তিনি আশঙ্কামুক্ত নন। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বোর্ডের তত্ত্ববধানে তার চিকিৎসা চলছে।

আল্লামা শাহ আহমদ শফীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে হেফাজতে ইসলামের কোনো নেতা কিংবা হাটহাজারী মাদ্রাসার কোনো শিক্ষক অবগত নন। এমনকি হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব মো. জুনায়েদ বাবুনগরীও বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না। একান্ত পারিবারিক সদস্যরাই চিকিৎসার বিষয়টি তদারকি করছেন।

শুরুতে ছোট ছেলে আনাস মাদানির সিদ্ধান্তে আহমদ শফীকে চট্টগ্রামের গোল পাহাড়ের বেসরকারি ক্লিনিক সিএসসিআরে ভর্তি করা হয়। এর পর আনাস মাদানী দুবাই চলে যান। বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতির খবর পেয়ে দেশে ফেরেন। এর পর গত ৬ জুন হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেওয়া হয় আহমদ শফীকে। সিএসসিআরে চিকিৎসার সময় তার ফুসফুস থেকে পানি বের করা হয় বলে চিকিৎসকরা জানান।

জানা যায়, চট্টগ্রামের হেফাজতের নেতারা চেয়েছিলেন আহমদ শফীকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করতে। কিন্তু সেখানে রোগীর সঙ্গে কেবল দুইজন লোক ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে মানা আছে। রোগী পুরো সময় থাকবেন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে।

এ অবস্থায় পুরান ঢাকার ফরিদাবাদ মাদ্রাসার পরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির এবং বেফাকের মহাসচিব আবদুল কুদ্দুসের আগ্রহে মূলত আহমদ শফীকে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শাহ আহমদ শফী কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের সংগঠন বেফাকের চেয়ারম্যান।

হেফাজতের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শারীরিক দুর্বলতা নিয়ে গত ১৮ মে শাহ আহমদ শফীকে চট্টগ্রামের সিএসসিআরে ভর্তি করা হয়। ২১ মে থেকে তিনি কথা বলতে পারছেন না। ওইদিন থেকে তার খাওয়া-দাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। সেদিনই তাকে ক্লিনিকটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়।

শরীরের অবস্থার উন্নতি দেখা দিলে ১ জুন তাকে আইসিইউ থেকে বের করা হয়। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে যান। ফলে তাকে আবার আইসিইউতে নেওয়া হয়। হাটহাজারী মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন, শাহ আহমদ শফী ৪০ বছর ধরে এ মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে আছেন। অথচ হুজুরের শরীরের কী অবস্থা তা মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক কেউ জানেন না।