• শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

সিএমপি কমিশনারের গোয়েন্দা যাদুতে জিফোর এসের ৩ কোটি টাকা উদ্ধার


প্রকাশিত: ১১:৪১ পিএম, ১৪ অক্টোবর ১৪ , মঙ্গলবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬২ বার

 

image

 

চট্টগ্রামে জিফোর এসের চুরি যাওয়া তিন কোটি টাকার মধ্যে দুই কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা মিলেছে মসজিদের এক মুয়াজ্জিনের কক্ষে! দুই ব্রিফকেস ভর্তি এসব টাকা উদ্ধার করা হয় সোমবার গভীর রাতে।
শফিক আজিজ/ প্রদীপ শীল চট্টগ্রাম থেকে: 
সিএমপি কমিশনারের গোয়েন্দা যাদুতে উদ্ধার হয়েছে জিফোর এসের চুরি হওয়া তিন কোটি টাকা।চোরাই টাকা মিলেছে এক মুয়াজ্জিনের হেফাজত থেকে। তবে ঘটনার মূল ক্রিমিনাল এখনো পলাতক রয়েছে। পুলিশ ও গোয়েন্দারা বলেছেন, শিগগির তাকে পাকরাও করা হবে।

টাকা উদ্ধার অভিযানে ছিলেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) শেখ শরিফুল ইসলাম, সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মঈন উদ্দিন ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাঁচলাইশ জোন) দীপক জ্যোতি খীসা, সদরঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সদীপ কুমার দাশ, খুলশী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুকান্ত চক্রবর্ত্তী, নগর গোয়েন্দা পুলিশের এস আই সন্তোষ কুমার চাকমা, এস আই আফতাব হোসেন, এস আই রাজেশ বড়ুয়া এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলশী থানার এস আই রাসেল মিয়া।

চট্টগ্রামের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চুরির এ ঘটনা উদ্ঘাটন করতে ১১ পুলিশের লেগেছে ১২ ঘণ্টা সময়। যার কক্ষ থেকে চুরি করা টাকা উদ্ধার করা হয় সেই বশিরুল আলম আইস ফ্যাক্টরি রোডে থাকা সরকারি সিটি কলেজ জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন! সে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার লাল মোহাম্মদ রোডের মৃত নজির আহমদের ছেলে।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘মুয়াজ্জিন বশিরুলের সাথে শহীদুলের পরিচয় দুই বছরের। পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে গত ১২ অক্টোবর তিনটি চালের বস্তায় টাকা ভরে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহীদুল তার কাছে আসে। এরপর তারা দুইজনে বসে সেগুলো দু’টি ট্রলিব্যাগে রাখে। পরে শহীদ চলে যায়।’অবশ্য চুরির সাথে নিজের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন মুয়াজ্জিন।

তিনি বলছেন, ‘পূর্ব পরিচিত নিরাপত্তা কর্মী শহীদুল ওরফে শাওন রোববার সন্ধ্যায় বই আছে বলে ব্রিফকেসগুলো তার কক্ষে রেখে যান।’

গত রোববার ভোরে নকল চাবি ব্যবহার করে নগরীর খুলশী চার নম্বর সড়কে জিফোর এসের কার্যালয়ের একটি ভল্ট থেকে তিন কোটি টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় এখনো পলাতক রয়েছেন ঘটনার মূলহোতা নিরাপত্তাকর্মী শহীদুল।এদিকে চুরির টাকা উদ্ধারের পর মঙ্গলবার দুপুর ২টায় সংবাদ সম্মেলন করে সিএমপি।

সিএমপি কমিশনার আবদুল জলিল মণ্ডলের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অর্থ, প্রশাসন ও ট্রাফিক) একেএম শহীদুর রহমান, অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার, উপ পুলিশ কমিশনার পরিতোষ ঘোষ ও জিফোর এসের সিনিয়র ব্যবস্থাপক মেজর তারেক মনছুর।

পুলিশ জানায়, রোববার ভোরে চট্টগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই চুরির ঘটনা ঘটলেও নগর গোয়েন্দা পুলিশ জানে পরের দিন সোমবার বিকেল ৩টায়। যাদের ভল্ট থেকে টাকা চুরি হয়েছে সেই নিরাপত্তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জিফোরএস মামলা করতে দেরি করায় এত পরে অবহিত হয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। তবে তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই অপারেশনের নেমে পড়ে ডিবি ও খুলশী থানার ১১ সদস্য।

রাত ১০টার মধ্যেই নিশ্চিত হয়ে যায় টাকার অবস্থান। এরপর কৌশল ঠিক করে ঘিরে ফেলা হয় আইস ফ্যাক্টরি রোডের সিটি কলেজ। রাত ৩টায় চূড়ান্ত অপারেশনে যায় পুলিশ। এক পর্যায়ে ভেতরে ঢুকে উদ্ধার করা হয় দুই কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আটক করা হয় বশিরুলকে। সকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালেও আর আটক করা যায়নি মূল হোতা শহীদুলকে।

টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গে নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার দীপক জ্যোতি খীসা বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর পুলিশের ১১ সদস্যের একটি টিম টাকা উদ্ধারে মাঠে নামে। টানা অভিযানে রোববার রাত ৩টার দিকে টাকাগুলো সিটি কলেজের মসজিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার মূলহোতা শহীদুলকে আটক করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’