• শনিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৪

সাবেক স্ত্রীর পরকীয়ায় আত্মহত্যায় বাধ্য হন গাবতলী ওসি হাসান


প্রকাশিত: ৮:১৪ পিএম, ৩১ মার্চ ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬১ বার

0c-bogra gabtoli-www.jatirkhantha.com.bd

গাবতলী প্রতিনিধি  :  সাবেক স্ত্রীর পরকীয়ায় আত্মহত্যায় বাধ্য হন গাবতলী ওসি । এরআগে বগুড়ার গাবতলী মডেল থানার ওসি আ ন ম আবদুল্লাহ আল হাসানকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় সাবেক স্ত্রী রুমানা আকতার মিতু ও শ্বশুর মোকসেদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গাবতলী থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের পাবনা শহরের শালগাড়িয়ার বাসা থেকে গ্রেফতার করে।

শুক্রবার বিকালে তাদের আদালতে হাজির করে শুধু মিতুকে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরিফুল ইসলাম ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি শ্বশুরকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাবতলী থানার ওসি (তদন্ত) মো. নুরুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে পাবনার শালগাড়িয়ার বাসা থেকে প্রধান আসামি মিতু (৩৫) ও তার বাবা সাবেক সেনা সদস্য মোকসেদ আলীকে (৬৫) গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার বিকালে তাদের বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়।

এসময় মিতুকে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৫ দিনের মঞ্জুর করেন। পরে তার বাবাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। মিতুকে গাবতলী থানাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এদিকে প্রধান আসামিসহ দু’জন গ্রেফতার হওয়ায় আত্মহননকারী ওসি হাসানের পরিবার ও সহকর্মীদের মাঝে স্বস্তি দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার কদমতলা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আ ন ম আবদুল্লাহ আল হাসান গত ২০১৫ সালের ২ অক্টোবর পাবনা সদর থানায় ওসি হিসেবে যোগদান করেন। তার স্ত্রী সুলতানা রাজিয়া রোজী পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ে ও দ্বিতীয় শ্রেণীর ছেলেকে নিয়ে রাজশাহীর উপ-শহরে বসবাস করেন।

ওসি হাসান পাবনা থাকাকালে শহরের শালগাড়িয়ার মোকসেদ আলীর মেয়ে ও এক কন্যা সন্তানের জননী প্রবাসীর স্ত্রী রুমানা আকতার মিতুর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তাকে বিয়ে করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। পরে গত বছরের ৪ নভেম্বর প্রথম স্ত্রী রোজী পাবনা থানা কোয়ার্টারে এসে ওসি হাসান ও মিতুকে জুতাপেটা করেন। এ ঘটনার জেরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে জয়পুরহাটে বদলি করেন।

সেখান থেকে গত ৬ ফেব্রুয়ারি তিনি বগুড়ার গাবতলী থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। ওসি হাসান একাই গাবতলী থানার কোয়ার্টারে থাকতেন। পরে গত ১৭ জানুয়ারি ২০ লাখ টাকা মূল্যের ফ্ল্যাট কিনে দেবার বিনিময়ে মিতুকে তালাক দেয়া হয়। এরপরও তার সাথে ওসি হাসানের সম্পর্ক অটুট ছিল। সম্প্রতি মিতু গাবতলী থানাতেও এসেছিলেন। সাবেক ও বর্তমান স্ত্রীকে নিয়ে তিনি বিপাকে পড়েন।

এসব নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিমর্ষ ছিলেন ওসি হাসান। বুধবার সকাল পৌণে ১০টার দিকে থানায় এসে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর ডিউটি অফিসার এএসআই হাসিনাকে একটি চিঠি ও চাবি দিয়ে বলেন, ‘তোমার ভাবী এলে দিও। আর আমি বদলি হলে আমায় ক্ষমা করে দিও।’ এরপর কোয়ার্টারে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।

পরে বুধবার রাতে প্রথম স্ত্রী রোজী গাবতলী থানায় মিতুসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে তার স্বামীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করেন। ওই রাতেই ময়নাতদন্ত শেষে ওসি হাসানের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নাটোরে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে।