• শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সাগরেদের কিশোরী যৌন হয়রানির তথ্যে হিলারী’র ভোট নড়বড়ে


প্রকাশিত: ২:৩০ এএম, ৪ নভেম্বর ১৬ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪১ বার

আন্তজার্তিক ডেস্ক রিপোর্টার : সাগরেদের কিশোরী যৌন হয়রানির তথ্যে হিলারী’র ভোট নড়বড়ে অবস্থার সৃষ্ঠি হয়েছে। 8এফবিআই তদন্তে ইতোমধ্যে ডেমোক্রাট প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভারে বেশ কিছু স্পর্শকাতর তথ্য মিলেছে।এতে হিলারির ঘনিষ্ট ‘হুমা আবেদিন ও ওয়েনারের একটি ডিভাইস থেকে এক কিশোরকে যৌন হয়রানীর তথ্য মিলেছে। যেখানে ওয়েনার নর্থ ক্যারোলিনার এক ১৫ বছর বয়সী কিশোরীর কাছে যৌন হয়রানিমূলক বার্তা পাঠিয়েছিলেন।

দুইদিন আগেই এফবিআই পরিচালক জেমস কোমির সুরক্ষা নিশ্চিতের চেষ্টা করলেও এবার ওই কেন্দ্রীয় ওই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাকে একহাত নিয়েছেন ওবামা। নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে হিলারির ইমেইল পুনঃতদন্তে নেওয়া এফবিআই-এর সিদ্ধান্তের কঠোর hillary-trump-www-jatirkhantha-com-bdসমালোচনা করেছেন তিনি। বুধবার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘নাও দিজ নিউজ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানান ওবামা। এর দুইদিন আগে ওই একই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এফবিআই-এর বিতর্কিত পরিচালক জেমস কোমির পক্ষে পরোক্ষ অবস্থান নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

মুখপাত্রের মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, তিনি মনে করেন না যে নির্বাচন প্রভাবিত করতে এফবিআই এমনটা করেছেন। তবে বুধবার ওবামা বলেছেন, অসম্পূর্ণ তথ্যের ভিত্তিতে এফবিআই প্রধান বিষয়টি নিয়ে নতুন করে তদন্তের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা প্রচলিত নিয়মের লঙ্ঘন। অবশ্য সোমবারের সাক্ষাৎকারেও ওবামা বলেছিলেন, কেন এফবিআই হিলারির ইমেইল পুনঃতদন্তের সিদ্ধান্ত নিলো, তার জবাব তীব্র সমালোচনার মুখে পড়া এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকেই দিতে হবে।

6হিলারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যক্তিগত সার্ভার থেকে ইমেইল আদান-প্রদান করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে আদান-প্রদান করা ইমেইলগুলোতে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়েরও উল্লেখ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের নিয়ন্ত্রিত চ্যানেল ছাড়া ক্লাসিফায়েড তথ্য আদান-প্রদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ধরনের অনিরাপদ চ্যানেলের মাধ্যমে অতি গোপনীয় ইমেইল ফাঁস হওয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করে মার্কিন সরকার।

তবে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহারের কথা স্বীকার করলেও হিলারির দাবি, তিনি ভুল কিছু করেননি। হিলারির ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে ইমেইল আদান-প্রদানের কারণে আইন ভঙ্গ হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই। গত ২৯ জানুয়ারিতে সংস্থাটির অনুরোধে হিলারির ২২টিরও বেশি ইমেইলকে ‘অতি গোপনীয়’ বলে ঘোষণা 7করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর।

আর চলতি বছরের জুলাইয়ে কোমি জানিয়েছিলেন, ‘২০০৯-১৩ মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন হিলারি ক্লিনটন অসতর্কভাবে বেশ কিছু গোপন তথ্য আদান প্রদান করেন। যা অপরাধমূলক কাজ। মূলত ফেডারেলের আইন ভঙ্গ করে নিজের ইমেইল সার্ভার ব্যবহার করে হিলারি এসব কাজ করেছিলেন।’ তবে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুলের’ জন্য তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি এফবিআই। তবে গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই-এর প্রধান জেমস কোমি বেশ হিলারির ব্যক্তিগত সার্ভারে বেশকিছু স্পর্শকাতর তথ্য পাওয়ার দাবি করে হিলারির ইমেইলগুলো নিয়ে পুনঃতদন্তের সিদ্ধান্ত জানান।

5বুধবারের সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, এফবিআই-এর এই তদন্তে তিনি কোনোভাবে নাক গলাতে চান না। নাক গলাচ্ছেন এমন কোনও ইঙ্গিতও দিতে চান না। তবে এই তদন্ত নতুন করে শুরু হওয়ায় তিনি সন্তুষ্ট নন। কারণ, এ বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে তদন্ত করা হয়েছে। ওই তদন্তের ভিত্তিতে এফবিআই ও বিচার বিভাগ একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল। আর সেটা হচ্ছে, হিলারি ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে ভুল করেছেন।

কিন্তু এর মাধ্যমে তিনি কোনও অপরাধমূলক কাজ তিনি করেননি। কংগ্রেসও এ বিষয়ে তদন্ত করে একই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল। এফবিআই-এর অতীত অবস্থানের সঙ্গে সুর মিলিয়ে ব্যক্তিগত সার্ভারে অফিসিয়াল ই-মেইল ব্যবহারকে হিলারির ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ বলেও মন্তব্য করেন ওবামা। তিনি বলেন, ‘এখন এটা নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। তবে হিলারির ওপর আমার নিরঙ্কুশ আস্থা রয়েছে।’

9তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের ফক্স ফ্রাইডে অনুষ্ঠানে এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি জানিয়েছিলেন, ‘তদন্তকারীরা হিলারির মেইলগুলোতে কোনও বিশেষ তথ্য আছে বা কোনও বিশেষ বার্তা বহন করে কিনা, তারা তা খতিয়ে দেখছেন। এফবিআই ইতোমধ্যে ডেমোক্রাট প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভারে বেশ কিছু স্পর্শকাতর তথ্য পেয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, হিলারির ঘনিষ্ট ‘হুমা আবেদিন ও ওয়েনারের কাছ থেকে এফবিআই একটি ডিভাইস আটক করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে ওয়েনার নর্থ ক্যারোলিনার এক ১৫ বছর বয়সী কিশোরীর কাছে যৌন হয়রানিমূলক বার্তা পাঠিয়েছেন।’

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া খবর থেকে জানা গেছে, মার্কিন কংগ্রেসের নেতাদের কাছে লেখা চিঠিতে কোমি জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি তদন্তকাজ পরিচালনার সময় তারা এমন তথ্যের সন্ধান পেয়েছেন, যা হিলারি ক্লিনটনের 77ই-মেইল তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। সে কারণে এই তদন্ত নতুন করে শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে সম্প্রতি কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, ইমেইলের বিষয়ে আদালতের আদেশ আসার পরও প্রায় ৩০ হাজার ইমেইল মুছে ফেলা হয়েছিল হিলারির ইমেইল সার্ভার থেকে, যা প্রমাণ লোপাটের অভিযোগকে প্রশ্নাতীত করে।

এদিকে মার্কিন নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত ই-মেইল ব্যবহারের বিষয়ে নতুন করে তদন্ত শুরুর এ সিদ্ধান্ত নির্বাচনে নতুন মোড় তৈরি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এরইমধ্যে গত মঙ্গলবার এবিসি টেলিভিশন এবং ওয়াশিংটন পোস্ট পরিচালিত এক জনমত জরিপে এর প্রতিফলন দেখা গেছে। এতে দেখা যায়, জনপ্রিয়তায় হিলারিকে টপকে গেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। জরিপে ৪৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, তারা নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন দেবেন। অন্যদিকে, ৪৫ শতাংশ ভোটার বলছেন, তারা হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন দেবেন।