• বৃহস্পতিবার , ২৫ এপ্রিল ২০২৪

শিশু খুনী রিডফার্মার পক্ষে স্বাস্থ্যসচিব?


প্রকাশিত: ১:৫৬ পিএম, ২৩ আগস্ট ১৭ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩১ বার

এস রহমান  :  শিশু খুনী রিডফার্মার পক্ষে স্বাস্থ্যসচিব? ভেজাল সিরাপে ২৮ শিশুর মৃত্যু নিয়ে স্বাস্থ্য সচিবের প্রতিবেদন গ্রহণ করেননি ridpharma-www.jatirkhantha.com.bdউচ্চ আদালত।কারণ, প্রতিবেদনে ভেজাল প্যারাসিটামল প্রস্তুতকারী রিড ফার্মার প্রতি এ-আনুকূল্য দেখনো হয়েছে? কিন্তু কেন এ আনুকূল্য তানিয়ে প্রশ্ন অনেক ? জানা গেছে, বুধবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বাস্থ্য সচিবের প্রতিবেদন গ্রহণ করেননি। পাশাপাশি তাকে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের আদেশ দেন।

আদালত শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তে গাফিলতি করা দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য সচিবকে তলব করেছিলেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এর আগে মনজিল মোরসেদ বলেন, রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ খেয়ে ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় আদালতের রায়ে ঔষধ প্রশাসনের দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে অবহেলার বিষয়টি উঠে আসার পর তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

এরপর স্বাস্থ্য সচিবের পক্ষে গত সোমবার একটি প্রতিবেদন দেয়া হয়। যাতে বলা হয়, ওই দুই কর্মকর্তাকে সতর্ক করা হয়েছে। অথচ আদালত জানতে চেয়েছিলেন কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ব্যবস্থা না নেয়ায় ব্যাখ্যা দিতে স্বাস্থ্য সচিবকে বুধবার ফের তলব করেন হাইকোর্ট। ওই দুই কর্মকর্তা হলেন : ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও উপ-পরিচালক আলতাফ হোসেন।

জানা যায়, ২৮ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে ওই দুই কর্মকর্তার অদক্ষতা ও অযোগ্যতা প্রমাণিত হওয়ার পরও তারা বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। এক সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ১৬ মার্চ ওই দু’জনের অদক্ষতা ও অযোগ্যতা বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চান।

এরপর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ১১ জুলাই একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনে ওই দুই কর্মকর্তার অবহেলা দেখা যায়। এ অবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে আরেকটি আবেদন দাখিল করা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত ওই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে নির্দেশ দেন।

২০০৯ সালের জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত রিড ফার্মার ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবন করে সারা দেশে ২৮ শিশু মারা যায়। এ ঘটনায় ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ঢাকার ড্রাগ আদালতে ওষুধ কোম্পানিটির মালিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর আদালত রিড ফার্মাসিউটিক্যালসের মালিকসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে বেকসুর খালাস দেন। রায়ে বলা হয়, ১৯৪০ সালের ড্রাগ আইনের ২৩ ও ২৫ ধারা প্রতিপালন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে তৎকালীন ঔষধ তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলাম ও আলতাফ হোসেন চরম অবহেলা, অযোগ্যতা ও অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

এই অভিমতের পর তাদের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার বৈধতা নিয়ে গত ১৬ মার্চ সম্পূরক আবেদনটি করেন মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন (এইচআরপিবি)। ভেজাল ওষুধ উৎপাদন বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালে হাইকোর্টে রিট করে সংগঠনটি। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই সম্পূরক আবেদনটি করা হয়।