• মঙ্গলবার , ১৯ মার্চ ২০২৪

রাবিতে পুলিশের রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসে ২০ শিক্ষার্থী আহত


প্রকাশিত: ৭:৫৩ এএম, ২ ফেব্রুয়ারি ১৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ২০৭ বার

রাজশাহী : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বর্ধিত ফি প্রত্যাহার এবং বিভিন্ন বিভাগে চালু করা সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে পুলিশ। এতে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আন্দোলনে অনড় শিক্ষার্থীরা আজ রোববার সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ-মিছিল করছিলেন। সকাল ১০টার দিকে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে সমাবেশ করতে থাকেন।

আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের বর্ধিত ফি বাস্তবায়ন স্থগিত করার বিষয়ে প্রশাসনের সিদ্ধান্তে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। তারা মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে যায়। একপর্যায়ে সেখানে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমাবেশের ভেতর তারা জোর করে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর পরই সাধারণ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে থাকে পুলিশ। এতে অন্তত ২০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদের সমাবেশ ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে প্রশাসন, পুলিশ, ছাত্রলীগ ও আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বর্ধিত ফি প্রত্যাহার এবং বিভিন্ন বিভাগে চালু করা সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে গতকাল শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে কোনো বিভাগেই ক্লাস ও পরীক্ষা হয়নি।

চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ধরনের বর্ধিত ফি বাস্তবায়ন স্থগিত করেছে। তবে বর্ধিত ফি পুরোপুরি প্রত্যাহার ও সন্ধ্যাকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবি মেনে না নেওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে ‘আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যের’ প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকেরা।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক মুহমঞ্চদ মিজানউদ্দিন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কয়েক দিন ধরে আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সহনশীলতার সঙ্গে মোকাবিলা করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নস্যাত্ হতে দিতে চাই না। তাই আমরা সব ধরনের বর্ধিত ফি বাস্তবায়ন স্থগিত করছি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’ সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধ করা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নিয়মিত কোর্সকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত করা হবে না—এমন নিশ্চয়তা নিয়েই বিভাগগুলোতে এই কোর্স চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বর্ধিত ফি স্থগিতের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে গতকাল প্রেস ব্রিফিং করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্ধিত ফি কার্যকর স্থগিত করেছে। কিন্তু আমরা চাই বর্ধিত ফি স্থগিত নয়, প্রত্যাহার করা হোক। আর সন্ধ্যাকালীন কোর্স বন্ধের মূল দাবি এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি। কোর্সটি স্থায়ীভাবে বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। এ সময় শিক্ষার্থীরা আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট পালন করার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া আগামী বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়।