• শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

মিশরে দুর্ধর্ষ আলামিনের প্রতারনার শিকার শত শত প্রবাসী-নিরব দূতাবাস!


প্রকাশিত: ১১:৩৪ পিএম, ১৭ মার্চ ১৬ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৭২ বার

বিশেষ প্রতিনিধি  :  আফ্রিকার দ্বার বলে পরিচিত মিশর। শিল্প, সংস্কৃতি ও সভ্যতার এক অপরূপ লীলাভূমী। মধ্যপ্রাচ্য লাগোয়া হওয়ায় মিশরের misor-1-www.jatirkhantha.com.bdভূরাজনৈতিক গুরুত্ব অনেক বেশী। বিশেষ করে সৌদি আরব ও লিবিয়ার প্রতিবেশী এবং সুয়েজ খাল এর মালিক হওয়ার মিশর সবসময় বিশেষ অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়ে আসছে।

মিশর আরব বিশ্বের মত উন্নত না হলেও বেশ কয়েক হাজার বাংলাদেশী প্রবাসী কর্মরত আছেন। এছাড়া আছে প্রচুর ছাত্র। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে মিশর পরিনত হয়েছে প্রবাসী  বাংলাদেশীদের দুঃস্বপ্ন ভূমিতে। আর এর কারন বাংলাদেশীরাই। এখানে কিছু বাংলাদেশী সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট সৃষ্টি হয়েছে।

যারা প্রবাসী বাঙ্গালীদের অপহরন সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ মূলক কাজ করে থাকে। মিশরে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের কার্মতৎপরতায় ইদানীং তুলনামূলক ভাবে অপরাধ কমে গেছে। তবে  পুরাতন এক সন্ত্রাসীর পুনরায় আবির্ভাব ঘটেছে। তার নাম সানোয়ার হোসেন ওরফে আলী ওরফে আলামিন।

তার দেশের বাড়ি নারায়নগঞ্জের বন্দর থানার পিছপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম আলী হোসেন। প্রায় নয় বছর আগে সে মিশরে পাড়ি জমায়। সেখানে গিয়ে সে জড়িয়ে পরে বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কাজে। সাথে দালালী ব্যাবসা। লিবিয়াতে মরুভুমির পথে লোক পাঠানোর একছত্র গডফাদার ছিল এই সানোয়ার ওরফে আলামিন।

তবে মিশর সরকারের কড়াকড়ির কারনে ইদানিং এই ব্যাবসা বন্ধ হয়েছে। বর্তমানে জাল ভিসা ও এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্ট করা তার সাইড ব্যাবসা। আসল ভিসার কথা বলে জাল ভিসা দিয়েছে  এরকম চার জন ভুক্তভোগীর সাথে আমাদের প্রতিবেদকের কথা হয়েছে ।

দুই বছর আগে আরেক প্রবাসী এর স্ত্রীকে জোর করে পতিতাবৃত্তিতে নামানোর চেষ্টা করে। সেই  ঘটনাময় বিক্ষুব্ধ প্রবাসীরা তাকে মেরে পা ভেঙ্গে দেয়। তখন সে কোন রকম ম্যানেজ করে টিকে থাকে । সুস্থ হওয়ার পর চাকরী নেয় মিশরের দশম রমাদান বলে এক ইন্ড্রাস্টীয়াল জোনের চকলেট কারখানায় । কয়েক মাস চাকরী করার পর কম্পানী তাকে অর্থ জালিয়াতির অপরাধে চাকরীচুত করে।

তার পর পুনরায় শুরু করে আদম ব্যাবসা ও জাল ভিসার ব্যাবসা। এছাড়া ফোন কার্ড , দেশী পন্য , গার্মেন্টস মেশিন ও এয়ার টিকেট কেনা-বেচার কথা বলে অন্তত ৯০ হাজার মিশরীয় পাউন্ড জালীয়াতি করে গত ছয় মাসে। তার দালালী ব্যাবসা মানেই প্রতারনা। মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে, বিদেশ না আনিয়ে হুমকি ধামকি দেওয়া তার নিত্তনৈমত্তিক ঘটনা।

দালালী কাজে সে তার পরিবারকে ব্যাবহার করে। আলামিনের বাবা ও ভাই সাধারনত বাংলাদেশের লেনদেন নিয়ন্ত্রন করে ।  সরোজমীনে তদন্ত করে দেখা যায়, আলামিনের বাবা নারায়নগঞ্জ বন্দর এলাকায় টং দোকানে ফল বিক্রি করে। মাসে আয়ে খুব বেশী হলে ২০ হাজার টাকা।

এদিকে আয়ের একমাত্র বিকল্প জোগানদাতা হিসেবে গত দুই বছর সানোয়ার মিশরে কোন চাকরী বা কোন বৈধ আয়ের সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। শুধুমাত্র আলামিনের বাবার ফলের দোকানের পাশের এক বিকাশ দোকানদারের সাথে কথা বলে জানা যায় যে শুধু গত নভেম্বর-ডিসেম্বর ২০১৫ ইং তে ১৫ লক্ষ টাকার উপরে বিকাশে এসেছে।

তার বাবার সাথে কথা বলে জানা যায় ৩ মাস আগে আলামিন ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছে নতুন ঘর ও জমি কেনার জন্য। সাংবাদিক পরিচয়ে আলামিনের প্রতারনার কথা বললে তার বাবা টাকার কথা এড়িয়ে যান এবং বলেন তার ছেলে কোন অপরধাধ করতে পারে না। তার ভাল আয়ের জন্য হিংসার বসবর্তী হয়ে কিছু লোক কুৎসা রটাচ্ছে।

তবে আলামিনের গ্রামে পিছপাড়ায় খোজ নিয়ে জানা যায়, তার আন্তীয় স্বজনের কাছ থেকে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা ও ১০ টা পাসপোর্ট এক বছর আগে নিয়েছে। বিভিন্ন তারিখ দিয়ে শুধু মাত্র তসলিম নামের একজনকে সে এনেছে। তবে তাকে আনিয়েছে টুরিস্ট ভিসা দিয়ে।

তসলিমের পরিবারের সাথে কথা বললে তার পরিবার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে “আলামিনের বিচার আল্লায় করব”। আলামিন এরকম ভাবে ফেনী, কুষ্টিয়া, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঢাকা, শরীয়তপুর, মুন্সিগঞ্জ, বরিশাল, কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সাথে প্রতারনার মাধ্যমে অন্তত পঞ্চাশ লক্ষ টাকা গত দুই বছরে জালিয়াতি করেছে বলে প্রতীয়মান হয়।

মিশরে তার ২ জন রক্ষিতার সন্ধান পাওয়া গেছে। আলামিন যাদের বাসা ভাড়া সহ যাবতীয় খরচ বহন করে এবং তার আন্তীয় স্বজনদের নিজের নিরাপদ আশ্রয় হিসাবে ব্যাবহার করে । তাছাড়া তার কাজ সহজ করার জন্য কিছু মিশরীয় যুবক তার সাথে সব সময় রাখে। আলামিন ফেসবুক সহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যাবহার করে নতুন নতুন সহজ সরল বিদেশ গমনে ইচ্ছুক লোকদের সাথে যোগাযোগ করে।

তার পর একজনকে অল্পখরচে এনে তার মাধ্যমে আরো বেশ কিছু পাসপোর্ট ও লোক সংগ্রহ করে। তারপর লোকদের সে বিভিন্ন অজুহাতে বিদেশে আনার জন্য নেয়া টাকা আর ফেরত দিত না। যে লোক নতুন এসেছে তার পক্ষেও আলামিনের এর ভয়ে কিছু বলা সম্ভব হয় না। কিছু বললেই মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং শারীরিক ভাবে অত্যাচার করে। এরকম একজন ভিকটিমের নাম মাইনুদ্দিন। তাকে গত ৪ মাস আলামিন অসহনীয় অত্যাচার করেছে। সে এখন মিশরে কোথায় আছে তা কেউ জানে না। মাইনুদ্দিন কে দিয়ে ফেনী থেকে আরো কিছু পাসপোর্ট নিয়ে সে একই কায়দায় ঘুরাচ্ছে। এভাবেই চলছে তার সম্রাজ্য।

কিছুদিন পর পর তার ঠিকানা বদলায়। সম্প্রতি ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ করে মিশরে নতুন আসা লোকদের টার্গেট করছে । তাদের বিভিন্ন ধরনের লোভ ও ফাদে ফেলে বিপদগামী ও সব কেড়ে নেয়ার অভিযোগ আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিশর থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসা এক প্রতারিত ব্যাক্তির সাথে প্রতিবেদকের কথা হয়। প্রথমে তাকে মিশর নিয়ে গিয়েছিল তারই এক নিকটস্থ ব্যাক্তি। কিন্তু ঘটনাক্রমে সানোয়ারের সাথে পরিচয় হয়। তার পর সানোয়োর ওরফে আলামিন তাকে ইউরোপ পাঠানের কথা বলে দফায় দফায় দুই হাজার ডলার নেয়। পরে তাকে ইউরোপ না পাঠিয়ে সানোয়ার তাকে তার ফ্যাক্টরিতে পার্টনার হতে  বলে এবং কিছু পাসপোর্ট এনে দিতে বলে। কিছুদিন থাকার পর উক্ত ব্যাক্তি আলামিনের জালিয়াতি ধরতে পেরে বাংলাদেশে ফেরত আসে। এখন সে হতদরিদ্র জীবন যাপন করছে। ঘটনাটি চলতি বছর জানুয়ারি মাসের।

তবে মিশরের বাংলাদেশী কমিউনিতে ইদানিং যে ঘটনা সবচেয়ে বেশী আলোচনা হচ্ছে তা আলামিনের সম্প্রতি মিশর প্রবাসী কিশোরগঞ্জের খোকন মিয়ার দশ লক্ষ টাকা জালিয়াতির ঘটনা।

প্রায় ৫ মাস আগে তাবলীগ জামাতপন্থী সহজ সরল খোকন মিয়ার কাছ থেকে তার আন্তীয়-স্বজনকে মিশরে আনার কথা বলে আলামিন তার বাবার মাধ্যমে বাংলাদেশ হতে তিন কিস্তিতে দশ লক্ষ টাকা নেয় । তার লোক আনার কথা ছিল ৫ জন। কিন্তু একজন লোক এনে বরাবরের মত আলামিন বিভিন্ন অজুহাত সৃষ্টি করে।

এবার অজুহাত হিসাবে বলে যে বাংলাদেশ থেকে নতুন আসা একজন প্রকৌশলীর কাছে টাকা দিয়ে ধরা খেয়েছে এবং তাকে কিছু বলতে পারতেছে না। এমন অবস্থায় সেই প্রকৌশলী ফাহাদ সহ জানুয়ারী ২০১৬ এর শেষ সপ্তাহে মার্গ নামক কায়রো শহরের এক এলাকায় পুরানো প্রবাসী আলীর মধ্যস্থতায় এক সালিশ হয়।

উক্ত সালিশে আলামিন কৌশলে প্রকৌশলী ফাহাদ কে কথা বলা থেকে বিরত রাখে এবং সাত লক্ষ টাকা দিবে এই মর্মে লিখিত দেয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আলামিনের ২ দিনের মধ্যে ২ লক্ষ টাকা ফেরত দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু আলামিন এর পর শুরু করে বাহানা ও নতুন প্ল্যান। এদিকে খোকন এর ফ্যাক্টরিতে প্রডাকশন ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত আছে আরেক দীর্ঘদিন প্রবাসী বাঙ্গালী সোহেল। আলীর মধ্যস্থতায় সালিশের প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও কোন টাকা না দিয়ে হুমকি দেয়ায় খোকন তার ম্যানেজার সোহেল কে জানায়।

সোহেল ২৫ শে ফেব্রুয়ারী ২০১৬ ইং তারিখ সন্ধায় তার ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের বাসায় ডেকে আনে। আলামিন সেখানে এসে টালবাহানা শুরু করলে সোহেল তাকে কয়েকটা চড়-থাপ্পর মারে। পরের দিন সকালে সোহেল তাকে ছেড়ে দেয় এই মর্মে যে আগামী তিন দিনের মধ্যে ২ লক্ষ টাকা শোধ করবে এবং বাকি টাকা ৬ মাসে শোধ করবে।

তবে উক্ত মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পরলে মিশরে বাংলাদেশের দূতবাস কোন ধরনের বে আইনি বিচার সালিসের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখিয়ে সোহেলকে মৌখিক সতর্ক করে। এ বিষয়ে সোহেলের সাথে ফোনে যোগাযেগ করা হলে বলে “ দেহেন ভাই আফনে সাংবাদিক হন আর যাই হন আমার এক কথা, খোকন পোলাডা গরিব আর একবারে নিরীহ। আমার ফ্যাক্টরিতে কাম করে, অর কথা হুইনা আমি আলামিনরে ডাইকা দুইটা চড় দিছি। তাও টাকা দিব না কই দেইখা। ও সম্পর্কে আমার ভাতিজা। কিন্তু ও একটা জানোয়ার। যে ভিডিও আফনে দেখছেন ঐখানে দেহেন আলামিনের নিজের স্বীকার আছে যে টাকা ও খাইয়া ফালাইছে। মাঝ খানথিকা আরেক কম্পুটার ইন্জিনিয়ারের লগে ঝামেলা পাকাইতে চাইছিল আমাগো দিয়া। ওরে ধইরা এম্বাসিতে জুবেদা ম্যাডামরে ফোন দিয়া কইলাম ঘটনা, হে কইল ছাইড়া দেন আমরা বিচার করমু। কিন্তু পরে কাউন্সেলর স্যার আমার পাসপোর্ট আটকাইয়া আমারে দোষ দিল। আমি বুঝি না আমার অপরাধ হইলে অরে আনুক এম্বাসিতে, আমারাও যাই, আমার অপরাধ হইলে স্যাররা আমার বিচার করুক। তয় খোকন পোলাডার কি হইব। এর মধ্যে পাসপোর্ট এর লাইগা আমার মাইয়ারে মিশরে স্কুলে ভর্তি করতে পারতাছি না। এর দায় কে নিব, এম্বাসি না আলামিন না খোকন।”

এ দিকে আমাদের প্রতিবেদক কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থানার ধনকি পাড়া খোকন এর গ্রামে গিয়ে করুন অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন। এই ঘটনায় খোকনের এক চাচা স্ট্রোক করে মারা গেছে কয়েকদিন আগে। এছাড়া খোকনের বাবা এখনো হাসপাতালে ভর্তি। খুব সাধারন নিম্নবিত্ত পরিবার। বাংলাদেশে তার পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায় খোকন শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার একটি পা পঙ্গু। অনেক কষ্ট করে মিশরে চাকরি করে।

এদিকে ঘটনা নিয়ে প্রকৌশলী ফাহাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন “আমি ও আমার কাছের বড় ভাই নতুন এসেছি। ফেসবুকে আলামিনের সাথে আমাদের পরিচয়। আলামিন এমন তা বুঝতে পারি নি প্রথম । আমার এক কাজিনকে দিয়ে ওর ১১ টা মুয়াফা ভিসা করিয়ে দিয়েছিলাম। যার জন্য কোন টাকাও দেয় নাই। টিকিট ও এয়ারপোর্ট কন্ট্রাকের জন্য পরে ৬ লাখ টাকা দেয়। কিন্তু সে আমার মাধ্যমে ৪ টা লোক ইতিমধ্যে এনেছে। আমি তার কাছে এখোনো ৫ লক্ষ টাকা টিকেট ও ভিসা বাবদ পাবো। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে সে আরো পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছে। এসবের যৌক্তিক আইনী প্রমান আমার কাছে আছে। পরে জানতে পারলাম সে আমাদের কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে আমার ভাই কিছু জানত না। সমস্ত লেনদেন আমার সাথে করেছে। এখন সে ফোন দিলে ফোন ধরে না। তবে মাঝে মাঝে তার সময়মত ফোন দিয়ে হুমকি দেয়।”

১৬ই মার্চ, ২০১৬ইং তারিখ বাংলাদেশ সময় সকাল ১০.৪৫ মিনিটে বিগত চারদিন অনেক চেষ্টার পর আলামিনকে ফোনে পাওয়া যায়। এসব বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে সে বলে “ সব ষড়যন্ত্র। এ সব সোহেল ও জুয়েলের চাল । একবার জুয়েলরে পিডাইয়া মিশর ছাড়া করছিলাম আবার সময় আসছে। এবার পিডানোর তালিকা বড় হইছে। খোকন, আলি , বাসেদ , সোহেল, উজ্জল , ফরহাদের খবর কইরা দিমু দেখবেন।” ।

এম্বাসিতে না যাওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে বলে “ এম্বাসি ম্যানেজ করা আছে। সময় হলে দেখবেন। আর কিসের সালিশ এখন একশন দেখবেন। দুনিয়া টাকার গোলাম । টাকা ছিটাইলে সব ঠিক। ”

কাকে কত টাকা দিয়েছেন এমন প্রশ্ন করলে তার উত্তরে বলে “ সালিশের জন্য আলী আর বাসেদকে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্ত ওরা হারামীর বাচ্চা। খোকনের চোখের মায়া কান্নায় পল্টি লইছে। ওদের শাস্তি দেখতে পারবেন। সোহেলরেত তো এম্বাসি দিয়া সাল্টিং শুরু করছি। আর এম্বাসিতো পুরা টাকাখোড় । টাকা ছাড়া তো কথাই নাই।”

আলামিনের বাড়িতে যাওয়া ও তার বিলাসিতার কথা বলতে আলামিনের বক্তব্য “ আচ্ছা আপনারে খোচা দিছে উজ্জলে না ? ও কইদিন পরই নাই হইয়া যাইব। একটু দাড়াইয়া লই। আর আমার বিরুদ্ধে কিছু লেইখেন না । আপনার বিকাশ নাম্বার দেন কিছু সালামি দেই। লেখেন সোহেল-জুয়েলদের নামে। আমি একশ প্রমান দিতে পারমু ওদের আকামে। তাছাড়া আমার পেছনে বড় মন্ত্রী আছে। আমার বা* কেউ ছিড়তে পারবে না। কইদিন পর বাংলাদেশ থেকে বড় মাপের লোক আসতাছে আমার জন্য। তখন সব বাপ বাপ করব। ”

দুর্ধর্ষ আলামিন এর  নানা অপকর্ম সম্পর্কে জানতে
দুর্ধর্ষ আলামিন এর  নানা অপকর্ম সম্পর্কে জানতে মিশরের কাউন্সিলর শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকা থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাতিরকন্ঠ কে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। কোন অভিযোগ থাকলে তিনি লেবার অফিসারের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। কথা বলার সময় তাঁর ভাবখানা এমন ছিল যেন আলামিন সম্পর্কে জানতে চাওয়াটাই অপরাধ হয়েছে।
প্রিয় পাঠক আলামিনের এম্বাসি ম্যানেজ ও টাকা দেয়ার কথাগুলো যাচাই করা হয় নি বা উক্ত ব্যাক্তিদের বক্তব্য নেয়া হয় নি। আগামী পর্বের প্রতিবেদনে আর্থিক লেনদেনের প্রমান সহ উপস্থাপন করা হবে এবং সব পক্ষের বক্তব্য নেয়া হবে।

এছাড়া বেটার বাংলাদেশ নামের এক সংগঠনের নাম ব্যাবহার করে আলামিন ইতিমধ্যেই সদস্য করার কথা বলে জন প্রতি একশ ডলার করে নিয়েছে বলে কয়েকটি অভিযোগ প্রমান সহ আছে। আগামী এবং তার পরের পর্বে এগুলো উপস্থাপন করা হবে। তাছাড়া এম্বাসির সংশ্লিষ্টতা বিষয় একটি অনুসন্ধানমুলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে আগামী সপ্তাহে। আলামিনের বিরুদ্ধে কারো কোন প্রমান সহ অভিযোগ থাকলে আমাদের বার্তা কক্ষে অথবা প্রতিবেদককে ই-মেইল (abmshafiq@gmail.com) করুন অখবা-ফোন  করুনঃ +৮৮০১৭১-৫০১১৮৩৭)