• শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল ২০২৪

মালয়েশিয়ার ভিসা ‘ভুয়া এসএমএস-প্রতারণা’


প্রকাশিত: ৮:৪৬ পিএম, ১০ মে ১৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৭ বার

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা ১০ মে ২০১৪: 

 

সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ব্যক্তিদের মুঠোফোনে তথ্য পাঠিয়ে প্রতারণা করতে শুরু করেছে একটি চক্র। মোবাইল ফোনে একটি নতুন এসএমএস এল। খুলতেই পর্দায় ভেসে উঠল, ‘অভিনন্দন। আপনার মালয়েশিয়ার ভিসা এসেছে।’ এসএমএসটিতে নির্দিষ্ট ব্যাংকে বা নগদে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।

এভাবেই সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ব্যক্তিদের মুঠোফোনে তথ্য পাঠিয়ে প্রতারণা করতে শুরু করেছে একটি চক্র।
মালয়েশিয়া যাওয়ার অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকদের সচেতন করতে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এরই মধ্যে দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কর্মীদের সতর্ক করার চেষ্টা করছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জি-টু-জি প্রক্রিয়ায় সরকারিভাবে নিবন্ধিত মালয়েশিয়ায় যেতে ইচ্ছুক কর্মীদের মোবাইল নম্বরে ভুয়া এসএমএস পাঠিয়ে একটি প্রতারক চক্র অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
এ ধরনের ভুয়া এসএমএসের ফাঁদে না পড়তে বিএমইটি থেকে জানানো হয়েছে, মালয়েশিয়া থেকে ভিসা পাওয়ার পর বিএমইটি থেকে সরাসরি কর্মীদের মোবাইল ফোনে এসএমএস বার্তা পাঠানো হবে, প্রয়োজনে ফোন করা হবে। অভিবাসন ব্যয়ের অর্থ শুধু রাজধানীর কাকরাইলের প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকে রশিদের মাধ্যমে জমা নেওয়া হয়। সরকারিভাবে মালয়েশিয়ার অভিবাসনসংক্রান্ত যেকোনো তথ্য জানার জন্য প্রয়োজনে (শুধু অফিস সময়ে) ৯৩৬১৬৯৬ অথবা ০১৭১৫২২৮৩০৭ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
প্রতারণাসহ নানা অনিয়মের কারণে ২০০৯ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া। দীর্ঘ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পর ২০১২ সালের নভেম্বরে মালয়েশিয়া এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন শেষে সরকারিভাবে কর্মী যাওয়া শুরু হয় মালয়েশিয়ায়। নিবন্ধন করা ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে এ পর্যন্ত মাত্র সাড়ে তিন হাজার কর্মী মালয়েশিয়ায় যেতে পেরেছেন। অন্যরা আছেন অপেক্ষায়।
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ নারায়ণগঞ্জ সদরের আমিনুল ইসলাম এক বছরের বেশি সময় ধরে মুঠোফোনে একটি ম্যাসেজ বা এসএমএস পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। ইউনিয়ন পরিষদে নিবন্ধনের পর জেলা পর্যায়ে এবং বিএমইটি থেকে লটারিতে বিজয়ী হন আমিনুল। এরপর রাজধানীর জার্মান পলিটেকনিক্যাল সেন্টার থেকে মালয়েশিয়ার ভাষা, কৃষিকাজসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন তিনি। স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ বিভিন্ন প্রক্রিয়া শেষে এখন আমিনুলের শুধুই অপেক্ষা।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিএমইটিতে ফোন দিলে শুধু বলে অনলাইনে মালয়েশিয়ায় সব কাগজপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে ভিসা এলেই এসএমএস দেওয়া হবে।’
আমিনুল ইসলাম জানালেন, তিনি ভুয়া এসএমএস পাননি। তবে কাকরাইল বিএমইটি অফিসে গিয়ে রংপুরের একজনের মোবাইলে ভুয়া বার্তাটি দেখেন ১৫ দিন আগে। এতে লেখা ছিল ‘অভিনন্দন, আপনি মালয়েশিয়ার ভিসা পেয়েছেন। ইসলামী ব্যাংকে ৪২ হাজার টাকা জমা দিন।’ পরে বিএমইটিতে গিয়ে পাসপোর্ট জমা দেওয়ার কথা বলা ছিল।
আমিনুল বলেন, ‘আমরা তীর্থের কাকের মতো একটি এসএমএস পাওয়ার অপেক্ষায় আছি। তাই যাঁরা কম শিক্ষিত বা সচেতন নন, তাঁরা ভুয়া এসএমএসের ফাঁদে সহজেই পা দেবে। কবে নাগাদ আমরা যেতে পারব বিএমইটি থেকে তার একটি তালিকা দিলে ভালো হতো।’
বিএমইটির মালয়েশিয়া সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নজরুল ইসলাম বলেন, গত সপ্তাহে মৌলভীবাজার থেকে চার-পাঁচটি ভুয়া এসএমএস পাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ প্রতারিত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি। এসএমএস পাঠালেও তাতে কোনো নম্বর থাকছে না। বিষয়টি নিয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে। কর্মীরা যাতে প্রতারিত না হন, সে জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সচেতন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।