• শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

ভালোবেসে চলে যেও না..তবুও বড় অযত্নে চলে গেলেন লাকী আখন্দ


প্রকাশিত: ৮:০০ পিএম, ২১ এপ্রিল ১৭ , শুক্রবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১২১ বার

laki akondi-www.jatirkhantha.com.bd.11নিপা খন্দকার  :  চলে গেলেন লাকী আখন্দ..।পৃথিবীর আর কেউ কোন কালে তাঁর ঘুম ভাঙ্গাতে পারবে না। লাকী আখন্দ এর গলায় আর শোনা যাবেনা-এই নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে..।laki akondi-www.jatirkhantha.com.bd.1laki akondi-www.jatirkhantha.com.bd

জানা গেছে, টানা আড়াই মাস হাসপাতালজীবন শেষে গেল সপ্তাহে আরমানিটোলার নিজ বাসায় ফিরেছিলেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী লাকী আখন্দ। এতদিন ভালোই ছিলেন। তবে আজ দুপুর নাগান তার শরীরের অবনতি ঘটে।

দ্রুত নিয়ে যাওয়া হয় মিটফোর্ড হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছটার দিকে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। ইন্না…রাজিউন। জাতিরকন্ঠকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী এরশাদুল হক টিংকু। যিনি লাকী আখন্দকে নিয়মিত দেখভাল করছিলেন।

জাতিরকন্ঠকে তিনি জানান, ‘দুদিন আগে কণ্ঠশিল্পী লীনু বিল্লাহ বাসায় গেছেন লাকী ভাইকে গান শোনাতে। ৮০’র দশকে যে গান দুটির সুরকার-সংগীত পরিচালক লাকী ভাই ছিলেন। তবে এখন নতুন সংগীতায়োজন করেছেন তমাল। মূলত, গান দুটির নতুন সংগীতায়োজন কেমন হয়েছে সেটি পরামর্শের জন্য লীনু ভাই গিয়েছিলেন।

খুব মন দিয়ে গান দুটি শুনলেন। প্রশংসা করলেন। আবার দুটি কারেকশনও দিলেন! মিউজিকের প্রতি এখনও এই মানুষটার যে আগ্রহ এবং বিচক্ষণতা- সেটা সত্যিই বিস্ময়কর।’   টিংকু লাকী আখন্দের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি বরেণ্য এ শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিএসএমএমইউ-এর সেন্টার ফর প্যালিয়েটিভ কেয়ারের ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানে অধ্যাপক নেজামুদ্দিন আহমেদের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।তখন লাকীর শরীরের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অধ্যাপক নেজামুদ্দিন বলেন, তিনি এখন ভালো আছেন। তবে তিনি মন্তব্য করেন-আগেও বলেছি, এই বিষয়ে নতুন কোনও চিকিৎসা নেই।

গুণী এই সংগীতজ্ঞ অনেক দিন ধরেই মরণব্যাধী ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন। ছয় মাসের চিকিৎসা শেষে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ দেশে ফেরেন তিনি। সেখানে কেমোথেরাপি নেওয়ার পর শারীরিক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছিল তার। একই বছরের জুনে আবারও থেরাপির জন্য ব্যাংকক যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে পরে আর তার সেখানে যাওয়া হয়ে উঠেনি।

অসুস্থতার প্রথম থেকেই লাকী আখন্দ ও তার পরিবার কোনও রকম আর্থিক সহযোগিতা গ্রহণের বিষয়ে বেশ কঠোর ছিলেন। দেশের শীর্ষ শিল্পীদের উদ্যোগে সহযোগিতা করতে চাইলেও বিনয়ের সঙ্গে লাকী আখন্দ সেটি গ্রহণে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। laki akondi-www.jatirkhantha.com.bd.12

গুণী কিংবা অভিমানী এই মানুষটি অন্যের সাহায্য-সহযোগিতায় নিজের চিকিৎসা চালাতে মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না। তবে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় এই সংগীতকারের চিকিৎসার জন্য পাঁচ লাখ টাকা সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় ভালোবাসা হিসেবে সেটি তিনি গ্রহণ করেছেন স্বাচ্ছন্দে।

লাকী আখন্দের সেরা গানের মধ্যে রয়েছে— ‘এই নীল মনিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মামনিয়া, ‘বিতৃঞ্চা জীবনে আমার’, ‘কি করে বললে তুমি’ ‘লিখতে পারি না কোনও গান, ‘ভালোবেসে চলে যেও না’ প্রভৃতি।