• শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

বিএনপি নেতা মিঠু খুন হয় ৩০ লাখ টাকায়-ডিআইজি


প্রকাশিত: ২:১৮ এএম, ৩১ মে ১৭ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫১ বার

স্টাফ রিপোর্টার :  ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে পরিকল্পিতভাবে খুলনা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার khulna mitu marder-www.jatiurkhantha.com.bdআলাউদ্দিন মিঠুকে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ড. মামুন রহমান যিনি বিদেশে থাকেন, তিনি এই টাকা ফুলতলা থানা বিএনপির সদস্য সচিব হাসনাত রিজভী মার্শালকে দিয়েছেন বলে মঙ্গলবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি দিদার আহমেদ এ কথা জানিয়েছেন।

ডিআইজি দিদার আহমেদ আরও জানান, মার্শাল এই টাকা হত্যাকারীদের মধ্যে লেনদেন করেছেন। আভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও পারিবারিক বিরোধের কারণে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরদার আলাউদ্দিন মিঠু ও ড. মামুন রহমান দু’জনই খুলনা-৫ (ফুলতলা-ডুমুরিয়া) আসনে বিএনপির প্রার্থী হওয়ার জন্য চেষ্টা করছিলেন। এজন্য মিঠু হত্যায় বিএনপি নেতা ড. মামুন হত্যাকারীদের পারিবারিক বিরোধকে কাজে লাগিয়েছেন। তবে তদন্তে মিঠু হত্যাকাণ্ডে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার সম্পৃক্ততা এখনো পাওয়া যায়নি।

রেঞ্জ ডিআইজি দিদার আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি নেতা সরদার আলাউদ্দিন মিঠুসহ জোড়া হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ, এনআইসি ডিএসবি, ডিবি ও র‌্যাব সম্মিলিতভাবে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে। তাৎক্ষণিকভাবে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ ও তথ্যের ভিত্তিতে নিহত মিঠুর দেহরক্ষী ফুলতলা উপজেলার দামোদর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে শিমুল হাওলাদার, মৃত জিন্নাহ ভুঁইয়ার ছেলে মুশফিকুর রহমান রিফাত, একই গ্রামের মৃত আব্দুল হান্নান ভুঁইয়ার ছেলে ফুলতলা থানা বিএনপির সদস্য সচিব হাসনাত রিজভী মার্শালকে গ্রেফতার করা হয়।

গত ২৮ মে এই তিনজন খুলনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালালের আদালতে হত্যাকাণ্ডের সাথে নিজেদের সম্পৃক্ত করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। উক্ত আসামিদের জবানবন্দির ভিত্তিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দামোদর পশ্চিমপাড়ার ওমর আলীর ছেলে তাইজুল ইসলাম রনিকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শটগান সদৃশ একটি দেশীয় কাটা বন্দুক ও ১ রাউন্ড কার্তুজসহ গত সোমবার ভোররাতে গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে ফুলতলা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাকে পুলিশ রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘মিঠু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি শিমুল হাওলাদার, রেহান, রনি ও মার্শালসহ আটজন জড়িত রয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে বাকি চারজনের নাম এখুনি বলা যাচ্ছে না। কিলিং মিশনে মোট পাঁচজন সরাসরি অংশ নিয়েছে। মিঠু হত্যাকাণ্ডে চরমপন্থি দল নেতা শিমুল ভুঁইয়া মূল ভূমিকা পালন করেছে। শিমুল ভুঁইয়া মিঠুর পিতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আবুল কাশেম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গেও জড়িত ছিল। মূলত যারা মিঠুর পিতা ও ভাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাব-৬এর অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) মো. একরামুল কবির, অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরাধ) হাবিবুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, র‌্যাব-৬’র স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার এনায়েত হোসেন মান্নান উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে নিহত মিঠুর ভাই সরদার সেলিম অভিযোগ করে বলেন, ‘তার ভাই মিঠু হত্যাকাণ্ডের মদদ ও অর্থযোগানদাতা ক্ষমতাশীল দলের একজন প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধি এবং  হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত দামোদর ইউপি চেয়ারম্যান চরমপন্থি দল নেতা শিমুল ভুঁইয়ার ভাই শিপলু  ভুঁইয়াকে বাঁচানোর জন্য পুলিশ মামলাটি ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা করছে।’

উল্লেখ্য, ২৫ মে রাতে দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে মিঠু ফুলতলার দামোদরে তার নিজ অফিসে বৈঠক করছিলেন বিএনপি নেতা মিঠু। এ সময় ডিবির পোশাক পরে ৪টি মোটর সাইকেলযোগে সাত/আটজন লোক সেখানে প্রবেশ করে মিঠুর মাথায় গুলি করে। এরপর তারা এলোপাথাড়ি গুলি করতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় মিঠুর দেহরক্ষী নওশের গাজী অফিসের দরজার শাটার বন্ধ করার চেষ্টা করলে তারা নওশেরকেও গুলি করে। তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাতেই তিনি মারা যান।