• শনিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশি দুর্নীতিবাজদের পেটে ১৮৫০ কোটি


প্রকাশিত: ১:১৫ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ১৭ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৪৪ বার

এস রহমান :  সাত বাংলাদেশি দুর্নীতিবাজদের পেটে ১৮৫০ কোটি রুপি। এনিয়ে মুখে তালা দিয়েছে ঢাকাস্থ এনপিবি Npb-www.jatirkhantha.com.bdকর্মকর্তারা। তারা কোন তথ্যই দিচ্ছেনা। এনপিবি’র ঢাকাস্থ কান্ট্রি অফিস এর জিএম কামরুজ্জামান অফিসে অবস্থান করেও ফোন ধরছেন না। তার পিএস নিশাত অনলাইন দৈনিক জাতিরকন্ঠকে বলছেন, স্যার আসেননি।  আজ রবিবার সকাল থেকে দুপুর অবধি ফোন দিয়ে এনপিবি’র ঢাকাস্থ কান্ট্রি অফিস এর জিএম কে পাওয়া যায়নি। তবে স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি অফিসে অবস্থান করলেও বলা হচ্ছে তিনি নেই।

জানা গেছে, পাকিস্তানের অন্যতম বাণিজ্যিক ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের (এনবিপি) ঢাকা শাখা থেকে এক হাজার ৮৫০ কোটি রুপি অবৈধভাবে হাতিয়ে নেয়ায় তোলপাড় চলছে পাকিস্তানে। এনিয়ে পাকিস্তানে মামলা হলেও কোন বাংলাদেশী এখনও ধরা পড়েনি।

এই বিপুল অংকের লোনের বিপরিতে কোন জামানত ছিলোনা। ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত এ দুর্নীতি হয়। এ দুর্নীতিতে জড়িত অভিযোগে সলিমুল্লাহ, প্রদীপ, কাজী নিজামসহ সাত বাংলাদেশিসহ ব্যাংকটির ১৬ শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে পাকিস্তানের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টেবিলিটি ব্যুরো-ন্যাব।

গত শুক্রবার আদালতের নির্দেশের এনবিপির সাবেক প্রেসিডেন্ট সাঈদ আলী রাজা, ঢাকা শাখার মহাব্যবস্থাপক ওয়াসিম খান, কর্মকর্তা তালহা ইয়াকুব, যোবায়ের আহমেদ ও ড. মির্জা আবরার বেগকে গ্রেফতার করেছেন। পাঁচ ব্যাংক কর্মকর্তাকে ন্যাবের হাজতখানায় রাখা হয়েছে। শনিবার তাদের করাচির দুর্নীতিবিরোধী আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে।

শুক্রবার সিন্ধুর প্রাদেশিক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আহমেদ আলি এম শেখের নেতৃত্বাধীন দ্বৈত বেঞ্চ এনবিপির সাবেক প্রেসিডেন্টসহ পাঁচ অভিযুক্তের আগাম জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের গ্রেফতারের আদেশ দেন। এরপর অভিযুক্তরা গ্রেফতার এড়ানোর জন্য আদালতের এজলাশে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে। একই সময়ে ন্যাব কর্মকর্তারা এজলাশের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। একপর্যায়ে সাঈদ আলী রাজা ও বাকি চার অভিযুক্ত বের হওয়া মাত্রই তাদের ধরে ফেলেন ন্যাব কর্মকর্তা।

এদিকে এনবিপির আরও দুই সাবেক প্রেসিডেন্ট কামার হোসেন এবং কাউসার মালিকের আগাম জামিন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট। এর আগে তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতিবিরোধী আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। জানা গেছে, এনবিপির কিছু কর্মকর্তা কোনো ধরনের যথাযথ জামানত ছাড়াই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ শাখা থেকে ঋণ অনুমোদন করে। এভাবে তারা পাকিস্তানের জাতীয় রাজস্বের ক্ষতি করেছেন এমন অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে গত বছর তদন্ত শুরু করে ন্যাব।

তদন্তে বেরিয়ে আসে, ব্যাংকের বাংলাদেশ শাখা থেকে ২০০৩ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত জামানত ছাড়াই প্রশ্নবিদ্ধ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ১৮ কোটি ডলার ঋণ দেয়। এ কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে জামানত হিসেবে রাখা সম্পদ বা অন্য কোনো সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পারেনি ব্যাংকটি।

ফলে ব্যাংকটির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ব্যাপক হারে বেড়ে যায়। এই সংকটের বিষয়টি বাংলাদেশ শাখা থেকে এনবিপির কেন্দ্রীয় শাখায় ১৯ বার অবহিত করা হয়। কিন্তু ব্যাংকের শীর্ষ ব্যবস্থাপকরা এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে নিরীক্ষণ সংস্থার (অডিট ফার্ম)প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। শুক্রবার, এনএবির প্রসিকিউটর এসএইচসি বেঞ্চকে জানায় যে সন্দেহভাজনরা এনবিপি বাংলাদেশ অপারেশনে তাদের দুর্নীতির চর্চার মাধ্যমে জাতীয় খাতের ভেতর কোটি কোটি টাকার ক্ষতি করেছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালের অডিট রিপোর্টে অনিয়ম দেখা যায় এবং পাকিস্তানের স্টেট ব্যাংকের সাবেক গভর্নরও এনবিপি কর্মকর্তাদের দোষারোপ করে অভিযোগ করেন। শুক্রবার সিন্ধু হাইকোর্টকে ন্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা এনবিপির বাংলাদেশ শাখার মাধ্যমে পাকিস্তানের শত শত কোটি রুপি ক্ষতি করেছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এনবিপির অনিয়মের বিষয়টি জানাজানি হয়। যাতে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন সাবেক গভর্নর অভিযোগ করেন, এনবিপির কর্মকর্তারা দুর্নীতিতে জড়িত।