• বৃহস্পতিবার , ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ফার্মা এইড্স-এর ট্রেড সাসপেন্ডে শেয়ারহোল্ডাররা উদ্বিগ্ন


প্রকাশিত: ৪:১০ পিএম, ২৭ এপ্রিল ১৪ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৮ বার

শফিক আজিজি: আপডেট: ২৭ এপ্রিল, ২০১৪:   ঢাকা স্টক একচেঞ্জ লিমিটেড এর কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারির ভুল ব্যাখ্যার কারণে দেশের একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক কর্তৃপক্ষ ও শেয়ার হোল্ডাররা নাজেহাল হচ্ছেন। এরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আইন কানুনকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অহেতুক হয়রানির চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদের ভুল কর্মকান্ডের শিকার হয়ে ৮১ দিন ধরে দেশের প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠান ফার্মা এইড্স লিমিটেড এর ট্রেড বন্ধ। এতে শেয়ারহোল্ডাররা মারাত্মক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
কোন ধরনের যুক্তি-সঙ্গত কারণ ছাড়াই ফার্মা এইড্স লিমিটেড এর ট্রেড বন্ধ রাখায় এর শেয়ারহোল্ডাররা শেয়ার বিক্রি করতে না পেরে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ফার্মা এইড্স লিমিটেড এর ট্রেড কেন বন্ধ করা হয়েছে সে সম্পর্কে কোন তথ্য দিচ্ছেন না ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর স্বপন কুমার বালা।
সংস্থাটির জিএম (অপারেশন) সামিউল ইসলামের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনিও কোন তথ্য দিতে রাজি হননি। ফার্মা এইড্স লিমিটেড এর ট্রেড বন্ধ কেন জানতে চাইলে তিনি অনলাইন দৈনিক জাতির কন্ঠকে বলেন, এমডির নির্দেশ ছাড়া এ সম্পর্কে তিনি কোন তথ্য দিতে পারবেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ ফেব্র“য়ারি ফার্মা এইড্স লিমিটেড এর ট্রেড বন্ধ করে দেয় ডিএসই। এর আগের দিন সংস্থাটির ট্রেড লিস্টিং এ্যাফেয়ার্স শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মামুনুর রশিদ ও এক্সিকিউটিভ রুমানা ফেরদৌস মৌ ফার্মা এইড্স লিমিটেডের কালিয়াকৈর কারখানায় আকস্মিক পরিদর্শনে যায়। পথিমধ্যে তারা সেল ফোনে ফার্মা এইড্স কোম্পানি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের কোম্পানির কার্যক্রম পরিদর্শনের জন্যে কারখানায় প্রবেশের অনুমতি চান।
কিন্তু পূর্বানুমতি না নেয়ার কারণে ফার্মা এইড্স ডিএসই’র সদস্যদের প্রবেশে অনিহা প্রকাশ করেও পরে যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে কারখানায় প্রবেশের অনুমতি দেয়; কিন্তু ততক্ষণে প্রায় ২৫/৩০ মিনিট দেরি হওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে ডিএসই’র সদস্যরা আর সারপ্রাইজ ভিজিট করেননি। পরে তারা ঢাকায় ফিরে ফার্মা এইড্স এর ট্রেড বন্ধ করে দেয়।
ফার্মা এইড্স এর প্রধান কার্যালয়ের লোকজন জানান, ডিএসই’র সদস্যরা ঢাকায় তাঁদের হেড অফিস থেকে অনুমতি না নিয়ে ফ্যাক্স বার্তা পাঠায়। কিন্তু ফ্যাক্স বার্তাও ছিল অস্পষ্ঠ। পরে ডিএসই’র লিস্টিং সেল থেকে মেইল করেন ফার্মা এইড্সকে।
সূত্র জানান, ডিএসই’র লিস্টিং সদস্যরা যথাযথ অনুমতি না নেয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ডিএসই কে শোকজ করে; কারণ তাদের অনুমতি না নিয়ে কোন কোম্পানির ট্রেড সাসপেন্ড করা যায় না।এ অবস্থায় বিএসইসি ডিএসই’কে চিঠি দিয়ে ৩ দিনের মধ্যে জানতে চায় ‘‘ কোন শর্তে ফার্মা এইড্স এ আকস্মিক পরিদর্শন ও শেয়ার ট্রেডিং সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’
বিএসইসি সূত্র জানায়, ট্রেড সাসপেন্ড করার আগে ফার্মা এইড্সকে কারণ দর্শানোর যথাযথ সুযোগ ও সময় দিয়ে চিঠি দেয়া হয়নি। পরে গত ১৮ ফেব্র“য়ারি শুনানি হয় ডিএসই’র কার্যালয়ে। সেখানে ফার্মা এইড্স কর্তৃপক্ষ তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন লিখিতভাবে। ওই সময় লিস্টিং সেলের ডিজিএম নিজাম উদ্দিন জানান, “আপনারা স্যরি বলেন, তাহলে ট্রেড ছেড়ে দেব; কিন্তু ফার্মা এইড্স কর্তৃপক্ষ যেহেতু কোন লিস্টিং রুলের শর্ত ভঙ্গ করেননি বিধায় তাঁরা স্যরি বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএসই কর্তৃপক্ষ লিস্টিং রেগুলেশন যথাযথ অনুসরন না করেই ফার্মা এইড্স এর ট্রেড সাসপেন্ড করে। কারণ, ডিএসই লিস্টিং রেগুলেশন এর যে তিনটি ধারা শোকজ নোটিশে উল্লেখ করেছে তার কোনটারই ব্যতয় করেনি ফার্মা এইড্স। এর মধ্যে লিস্টিং রেগুলেশনের ৬ (ীীর) ধারায় ডিএসই যে কোন ডকুমেন্ট চেয়ে চিঠি দিতে পারেন। তবে এটা নতুন কোম্পানির লিস্টিংয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অথচ ফার্মা এইড্স ২৬ বছর আগের ডিএসইতে লিস্টিং হয়েছে।
লিস্টিং রেগুরেশনের ৯.৭ ধারায় পেপার ডকুমেন্ট না দিলে প্রতিদিন এক হাজার টাকা করে জরিমানা করার বিধান রয়েছে। অথচ ডিএসই ফার্মা এইড্স এর কাছে কোন পেপার ডকুমেন্ট চায়নি।
এছাড়াও লিস্টিং রেগুলেশনের ৩১ ধারায় ডি লিস্টিং এবং সাসপেনশনের জন্যে যে বিধান রয়েছে তার কোনটার আওতায়ও ফার্মা এইড্স পরেনা।
এখানে উল্লেখ্য যে, ট্রেড সানপেনশনের পর থেকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি চিঠি ডিএসইকে দেয়ার পরেও কোন চিঠির উত্তর দেয়নি। ফার্মা এইড্স এর ট্রেড বন্ধ সম্পর্কে যৌতিক কোন কারণ জানাতে না পেরে লিস্টিং সেলের ডিজিএম নিজাম উদ্দিন জাতির কন্ঠকে জানান, ‘‘ ভাই টেলিফোনে এসব বলা যাবে না, আপনি অফিসে দেখা করেন ’’।কিন্তু গত ৩ দিন পর পর তার সঙ্গে দেখা করার জন্যে অফিসে যাওয়া হলেও তিনি মিটিংয়ের অজুহাতে কথা বলেননি।
এ ব্যাপারে ফার্মা এইড্স এর শেয়ার হোল্ডাররা অবিলম্বে ট্রেড সাসপেন্ড প্রত্যাহার করতে উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।