• বৃহস্পতিবার , ১৮ এপ্রিল ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী আইভীকে নৌকা দিয়েছেন-সেই’ই যোগ্য প্রার্থী


প্রকাশিত: ২:৩০ এএম, ১০ ডিসেম্বর ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৫ বার

স্টাফ রিপোর্টার  :  নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান বলেছেন, আওয়ামী লীগে কোনো বিভেদ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নৌকা দিয়েছেন। আইভীই যোগ্য প্রার্থী।

আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শামীম ওসমান
আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন শামীম ওসমান

আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাশে ফতুল্লার লামাপাড়ায় সড়ক ও জনপথের জমিতে তৈরি নাসিম ওসমান মেমোরিয়াল পার্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শামীম ওসমান এ কথা বলেন। এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাই, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে সরকারদলীয় এই সাংসদ বলেন, ‘আমার ছোট বোন আইভীর পক্ষে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কাজ করবেন। আগামীকাল থেকে আরও ব্যাপকভাবে তাঁরা পক্ষে নেতা-কর্মীদের দেখা যাবে। আইভী কী কাজ করবে আমার দেখার দরকার নেই। নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি অলিগলিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মানুষের পায়ে হাত দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার নৌকার জন্য ভোট চাইবে। আমার বিশ্বাস, নৌকার বিজয় হবে।’

শামীম ওসমান বলেন, ‘আগামী শনিবার আমি পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করে আমার ছোট বোন আইভীর সঙ্গে প্রতিটি ঘরে ঘরে যাব। আর এই সুযোগ যদি আমার নেত্রী না দেন তাহলে আমি সিটি করপোরেশনের বাইরে বসে নির্বাচনী কাজ করার অধিকার আছে। নির্বাচন আচরণবিধির বিধান নেই যে আমি বাইরে বসে কথা বলতে পারব না। যদি এই বিধানই থাকে, তাহলে টক শোতে বসে যাঁরা বিভিন্নভাবে কথা বলছেন, সেটাও কিন্তু বিধান থাকতে পারে না। টক শোতে আমরা দেখছি, বিভিন্নভাবে সবাই কথাবার্তা বলছেন।

গত নির্বাচনে আমি দেখেছি, কীভাবে চোগল, চুষিল ও আঁতেল যারা আছেন, তারা আমাদের জবাই দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। আমরা কিন্তু প্রতিবাদ করিনি। আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ করব, নির্বাচন কমিশন আমরা জনগণের প্রতিনিধি, জনগণের ভালোমন্দ দেখা আমাদের দরকার। নির্বাচন কমিশন আইনের পরিবর্তন আনা উচিত। আমি সংসদ সদস্য হলে আমি আমার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারব না, এটা হওয়া উচিত নয়।

আমাদের এই সুযোগ দেওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে আমরা একটি জিনিস করতে পারি, সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা নিতে না পারি। সে ব্যাপারে আপনারা আইন দিতে পারেন। কিন্তু আমি আমার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে পারব না, তাহলে আমার প্রার্থীর পক্ষে কে কাজ করবে? আমি তো জনগণের প্রতিনিধি, জনগণ তো চায়, আমার মুখ থেকে কথা শুনতে।’

সরকারদলীয় এই সাংসদ গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের ক্ষুদ্র একজন কর্মী। আমি আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগ করব এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত করব। আমরা যারা ৭৫-এর পর জন্ম নিয়েছি, আমরা কিন্তু ওয়ান মাস্টার দল। আমাদের নেত্রী একটা, শেখ হাসিনা।

ওনার ইচ্ছা, ওনার কাছ থেকে যে ভালোবাসা-স্নেহ পেয়েছি, ওনার জন্য যেকোনো ত্যাগ, যেকোনো কাজ করতে পারি। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমাদের জন্য তা শিরোধার্য।’ তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যদি বাংলাদেশে না আসতেন, জাতির পিতার হত্যার বিচার হতো না। শেখ হাসিনা ‘বোনাস’ হিসেবে এ দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন।

শামীম ওসমান বলেন, ‘যেহেতু আমি আমার ছোট বোন আইভীর সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পারছি না, নারায়ণগঞ্জের প্রসিদ্ধ দোকান বিশ্ব রঙ থেকে নৌকা প্রতীক-সংবলিত দুটি শাড়ি বানিয়েছি। যেহেতু আমি থাকতে পারছি না, তাই আইভী যখন এই শাড়ি পরে বিভিন্ন এলাকায় যাবে, তখন সে বুঝতে পারবে, আমার ভাই না থাকলেও ভাইয়ের দোয়া সঙ্গে আছে।’ তিনি বলেন, ‘এই দেশ আওয়ামী লীগের দেশ না, এই দেশ বিএনপির দেশ না।

এই দেশ ১৭ কোটি মানুষের দেশ। শেখ হাসিনা ১৭ কোটি মানুষকে নিয়ে চিন্তা করছেন, তাই মাদক-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়ার প্রত্যয়ে নৌকা মার্কায় যেহেতু ভোট চাইতে পারছি না, তাই দোয়া চাইছি। আশা করছি, আপনারা সবাই দোয়া করবেন যেন সঠিক প্রার্থী পাস করতে পারে।

আমি সাখাওয়াত হোসেনকে (বিএনপি দলীয় মেয়র প্রার্থী) অনুরোধ করব, আপনি কেন ভোট চাইবেন? কেন জনগণ আপনাকে ভোট দেবে? যদি সৎসাহস থাকে তাহলে আমাদের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ​ আইভীর সঙ্গে টেলিভিশনে ওপেন ডিবেটে আসেন। কেন মানুষ নৌকায় ভোট দেবে? কেন মানুষ ধানের শীষে ভোট দেবে? কেন দেবে না—আমরা প্রমাণ করব, আপনি প্রমাণ করার চেষ্টা করুন।

বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইভীর কাছে পরাজিত শামীম বলেন, ‘আইভীর প্রতি আমার রাগ, দুঃখ, ক্ষোভ, অভিমান নেই। তবে শাস্তি আমি আইভীকে একটা দেব—সেই শাস্তি হবে ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ের পরে শেখ হাসিনার কাছে যখন যাব, আপনাদের বলব, আমি আইসক্রিম খেতে পছন্দ করি। ওকে বলব, তোমার ফাইন হয়েছে, আমাদের প্রচুর পরিমাণে আইসক্রিম খাওয়াও।

আমরা ভাইবোন ছিলাম, ভাইবোন আছি, আমরা আওয়ামী লীগ পরিবার। শেখ হাসিনার পরিবার তো ছোট্ট পরিবার নয়। দুই কোটি কর্মীর পরিবার। ঝগড়াঝাঁটি হতেই পারে। ক্ষুদ্র স্বার্থের জন্য বৃহত্তর স্বার্থ নষ্ট করব না।’