• বৃহস্পতিবার , ২৮ মার্চ ২০২৪

নজরদারিতে-বিকল্প পথে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা


প্রকাশিত: ১:৫০ পিএম, ২২ নভেম্বর ১৫ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮২ বার

tarana-halimস্টাফ রিপোর্টার:  ইন্টারনেটে বিকল্প পথে যারা ফেইসবুকসহ বন্ধ থাকা যোগাযোগের অ্যাপগুলো ব্যবহার করছেন তারা সরকারের নজরদারিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ‘মোবাইল ডিভাইস অ্যান্ড ইটজ রোল ইন ন্যাশনাল সিকিউরটি’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “যারা ভিন্ন পথে সীমিতভাবে ফেইসবুকসহ অন্যান্য অ্যাপ ব্যবহার করছেন তারা কোনো নিরাপদ উপায়ে ব্যবহার করছেন না। এ কারণে আমরা তাদের মনিটর করতে পারছি।

অন্যদিকে ব্যবহার সীমিত হওয়ার কারণে অ্যাপগুলোর গতিও অনেক কমে গেছে। এর ফলে কেউ নাশকতার উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করতে চাইলেও তা পারবেন না।গত বুধবার যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড রিভিউয়ের আবেদন খারিজের দুই ঘণ্টা পর বাংলাদেশে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়।

সেদিন বেলা সোয়া ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কেউ কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারেননি।এরপর ইন্টারনেট সংযোগ ফিরতে শুরু করলেও সামাজিক যোগাযোগের কিছু ওয়েবসাইট ও অ্যাপ ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
তখন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘দেশ ও জাতির নিরাপত্তার স্বার্থেই’ অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, ফেইসবুক মেসেঞ্জার, ভাইবার ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করা হয়েছে।তবে ব্যবহারকারীরা ভিন্ন পন্থায় (প্রক্সি বা সফটওয়্যার) সফলভাবে এসব অ্যপ ব্যবহার করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন অনেকে।
গোলটেবিল আলোচনায় তারানা হালিম বলেন, সাময়িক নিরাপত্তার জন্য যদি একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হয় আমি মনে করি, যারা দেশকে ভালোবাসেন তারা রাষ্ট্রের জন্য কন্ট্রিবিউশন হিসেবেই এ ত্যাগ স্বীকার করবেন।শিক্ষার্থী ও তরুণদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “তোমাদের সমস্যা হচ্ছে জানি। কিন্তু জনস্বার্থে এ সাময়িক ভোগান্তি আমাদের দীর্ঘমেয়াদে সুরক্ষা দেবে।

কতদিন এসব অ্যাপ বন্ধ থাকবে- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যতদিন পর্যন্ত সরকার নিশ্চিত না হচ্ছে, জনস্বার্থে যতদিন বন্ধ রাখার প্রয়োজন হবে ততদিন এগুলো বন্ধ থাকবে। যারা জানেন না তাদের জানানোর দরকার নেই।
রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় মোবাইল হ্যান্ডসেটের ভূমিকা নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে র‌্যাব-১০ এর কমান্ডিং অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর জানান, বন্ধ থাকা ইন্টারনেট যোগাযোগের মাধ্যমগুলো বিকল্প উপায়ে অনেকে ব্যবহার করছেন।

এ সময় প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, আমি জানি অনেকেই এগুলো ব্যবহার করছেন। তবে কীভাবে ব্যবহার করছেন- তা বলার প্রয়োজন নেই। যারা জানেন না, তাদের নতুন করে জানানোর দরকার নেই।ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে জঙ্গিরা কার্যক্রম চালাচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে আগেই বলা হচ্ছিল।

পুলিশও বলে আসছিল, নাশকতাকারীরা মোবাইল ফোনে কথা না বলে ইন্টারনেটভিত্তিক এসব অ্যাপ ব্যবহার করায় তাদের ধরতে সমস্যা হচ্ছে।‘হ্যান্ডসেটও নিবন্ধনের আওতায় আসবে’মোবাইল যোগাযোগকে নিরাপদ করতে বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের পাশাপাশি হ্যান্ডসেটও নিবন্ধন করতে হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

গোলটেবিল আলোচনায় তিনি বলেন, “মোবাইল যোগাযোগকে নিরাপদ করতে দুটি ধাপে কাজ হবে। যার একটি বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন, যেটির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী এপ্রিলের মধ্যে এ নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হবে এবং প্রত্যেকটি সিম নিবন্ধনের আওতায় আসবে।

এরপর শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপ। এটি হল হ্যান্ডসেটের আইএমই নিবন্ধন।এ দুটি প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা বলতে পারব না যে, মোবাইল যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি।প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এটিকে আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। এখন দেখা যাচ্ছে অনেকেই আইএমই নম্বরের বিষয়টি জানেন না। তারা কম দামে ওয়ারেন্টি ছাড়া নকল ফোন কিনছেন, এতে তারা প্রতারিত হচ্ছেন।

“একটি সমন্বিত ডাটাবেইজ থাকা প্রয়োজন, যেটির অ্যাকসেস বিটিআরসি, মোবাইল অপারেটর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গ্রাহক পর্যায়েও থাকা উচিত। এতে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিধানসহ গ্রাহক পর্যায়ে প্রতারণার বিষয়গুলোও কমে যাবে।”সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে সারা দেশে সচল মোবাইল সিম রয়েছে ১৩ কোটি ১৪ লাখ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৫ কোটি ৪১ লাখ।

গোলটেবিলে আরও বক্তব্য রাখেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, কাস্টমস ইন্টেলিজেন্সের মহাপরিচালক ড. মঈনুল আহমেদ, মোবাইল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব আবু সাঈদ খান, গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম, র‌্যাবের পরিচালক কমান্ডার সাহেদ করিম প্রমুখ।