• বৃহস্পতিবার , ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ধর্ষকদের পক্ষে ওসি-ধর্ষিতার আত্মহত্যা


প্রকাশিত: ৫:৫৭ পিএম, ১৯ অক্টোবর ১৭ , বৃহস্পতিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫১ বার

ponchagor sonia-www.jatirkhantha.com.bd
পঞ্চগড় প্রতিনিধি :  পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার স্কুলছাত্রী রহিমা আক্তার সোনিয়ার ধর্ষকদের সঙ্গে পুলিশের যোগসাজশের অভিযোগ তুলেছে ভুক্তভোগীরা। এঘটনায়  পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্রের অপসারণ দাবি করেছে স্থানীয়রা। উপজেলার কাজী শাহাবুদ্দিন বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের মেধাবী ছাত্রী রহিমা আক্তার সোনিয়ার আত্মহত্যার ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে তাঁর অপসারণের দাবি জানানো হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সোনিয়ার বাড়ির সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ঘটনার শুরু থেকে অসহযোগিতা করছে পুলিশ। যথাসময়ে মামলা নেয়নি। প্রতিবাদের মুখে ঘটনার চারদিন পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা নেয় পুলিশ। রিমান্ডে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ওসি বাধা দিয়েছেন। ধর্ষণের ভিডিও ফুটেজ ও মোবাইল রেকর্ড উদ্ধার করছে না পুলিশ। এ কারণে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে ওসির অপসারণ করা প্রয়োজন।সংবাদ সম্মেলনে সোনিয়ার মা বলেন, ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণ ও আত্মহত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করবেন না এই ওসি (সরেস চন্দ্র)। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের স্বার্থে আমি ওসির অপসারণ দাবি করছি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সোনিয়ার বাবা জাহেরুল হক, মামা ফারুক হোসেন, তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম শাহিন ও ভাইস চেয়ারম্যান সুলতানা রাজিয়া, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার কাজী মাহাবুবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হান্নান, আতাউর রহমান, সাহেদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার সাদাত সম্রাট।

সোনিয়ার স্বজনরা জানান, সোনিয়ার মা অসুস্থ হয়ে বাড়িতে ছিলেন। তিন মাস আগে তার মায়ের জন্য ওষুধ দেওয়ার কথা বলে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ডবয় মনসুর আলম রাজন তাকে বাংলালিংক কাস্টমার কেয়ারের কর্মকর্তা আতিকুর রহমান আতিকের বাসায় নিয়ে যান। সেখানে প্রথমে রাজন ও পরে আতিক তাকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করেন। এরপর বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি দিয়ে তিন মাস ধরে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে আসছিলেন তাঁরা।

গত ৯ অক্টোবর ওই ছাত্রী বিষয়টি তার মা ও মামাকে জানায়। এ ঘটনার পর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ওই ছাত্রীকে বিষয়টি ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিতে থাকেন রাজন ও আতিক। একপর্যায়ে ওই ছাত্রী গত ১০ অক্টোবর আত্মহত্যা করে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে পরের দিন ১১ অক্টোবর সোনিয়ার মরদেহ দাফন করা হয়।পরিবারের অভিযোগ, সোনিয়ার আত্মহত্যার পর ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর রাত পর্যন্ত তার মা সেলিনা আক্তার থানায় একাধিকবার মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। এ নিয়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ শুরু করে।

পরে গত ১৫ অক্টোবর সোনিয়ার মা সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে আতিক ও রাজনের বিরুদ্ধে তেঁতুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯-এর ক ধারায় মামলা দায়ের করেন।সোনিয়ার মরদেহ পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ছয়দিন পর কবর থেকে গত মঙ্গলবার উত্তোলন করা হয়। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহরাব হোসেনের উপস্থিতিতে সোনিয়ার লাশ উত্তোলন করা হয়।