• শনিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৪

ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ চলবে না-হাসিনা এবার-সমুদ্রপথে হজের প্রস্তাব সচিবের


প্রকাশিত: ৩:৪৯ পিএম, ২২ জুলাই ১৭ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৫৮ বার

বিশেষ প্রতিনিধি :  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অল্প কিছু মানুষের ধর্মের নামে সন্ত্রাসবাদের জন্য নিরীহ মুসলমানদের বিপদে haj-www.jatirkhantha.com.bdপড়তে হয়। দেশে ইসলামের নামে এ ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ কিছুই কার্যকর করতে দেবো না। তিনি বলেন, ইসলাম হল শান্তির ধর্ম। এই ধর্মকে যেন কেউ অপব্যবহার করতে না পারে। কিছু লোকের ভ্রান্ত ধারণার ফলে গোটা বিশ্বের মুসলমানরা বিপদে পড়ে যাচ্ছে। শনিবার আশকোনায় হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বেসরকারি বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বি এইচ হারুন, স্থানীয় সাংসদ সাহারা খাতুন, সৌদি দূতাবাসের
চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স আবদুল্লাহ আল মুতাইরি এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল জলিল।

আশকোনায় হজ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে  ধর্ম সচিব আব্দুল জলিল প্রধানমন্ত্রীকে সার্বিক হজ কার্যক্রম তুলে ধরেন। এসময় তিনি বলেন, প্রতি বছর বিমানে হজের ব্যয় বাড়ছে। আগামী বছর হজযাত্রী পরিবহনে ব্যয় আরো বাড়বে। এজন্য তিনি একটি বিকল্প প্রস্তাব করে সমুদ্রগামী জাহাজের মাধ্যমে  হজে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তিনি একটি সমীক্ষা চালাচ্ছেন বলেও জানান। haj-www.jatirkhantha.com.bd.1

প্রধানমন্ত্রী ধর্মের নামে সন্ত্রাসবাদীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিরীহ মানুষকে মারার অধিকার কারও নেই। বিচার করবেন আল্লাহ। তার ওপর কেন আশ্বাস রাখতে পারেন না। আর আত্মঘাতী হলে কেউ বেহেস্তে চলে যাবে এমন কথা কোথাও বলা নেই। এই বিভ্রান্তিটা সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা চাই না আমাদের দেশ এ ধরনের বিভ্রান্তির দিকে যাক।

উপস্থিত হজ যাত্রীদের উদ্দেশে তিনি দোয়া চেয়ে বলেন, আপনারা পবিত্র জায়গায় যাচ্ছেন। আপনারা দোয়া করবেন আমাদের পবিত্র ধর্ম ইসলাম ধর্ম, শান্তির ধর্ম; আমাদের দেশে অন্তত সব ধর্মের মানুষ যেন শান্তিপূর্ণভাবে সহঅবস্থান করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, গত আট বছরে হজ ব্যবস্থাপনা নির্বিঘ্নে হয়েছে। নিশ্চয়তা দিচ্ছি ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।
haj-www.jatirkhantha.com.bd.2
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। ক্ষমতা গঠনের পর জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুস্মরন করে বায়তুল মোকাররম মসজিদের মিনার নির্মাণ, গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাসহ মসজিদ উন্নয়নের কাজ শুরু করি। মেয়েদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করি। প্রায় ৫ হাজার মহিলা যাতে একসঙ্গে বসে নামাজ আদায় করতে পারে সেই ব্যবস্থা করি। এবং ২০ হাজার মুসল্লি যাতে একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে সেই উন্নয়নের কাজ শুরু করি। ৯৬ থেকে ২০০১ সালে ক্ষমতায় থাকার সময় কাজগুলো শুরু করি। তখন সৌদি বাদশাকে বলেছিলাম আমাদের জাতীয় মসজিদের উন্নয়ন করতে চাই। তিনি আমাদের সাহায্য করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে যেটা হয়, যখন একটা সরকার কাজ শুরু করে পরবর্তী কোনো সরকার আসলে তা বন্ধ করে দেয়। তবে সব সরকার তা করে না। যেমন আমরা করি নাই। কিন্তু ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর মসজিদের উন্নয়নের কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদকে অনেক উন্নয়ন করে দিয়েছি। আপনারা দেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যতোবার হজে গিয়েছি কোথায় কি সমস্যা ছিল তা দেখার চেষ্টা করেছি। যা যা সমস্যা দেখেছি তা লিখে সৌদি বাদশাকে জানাতাম। ধীরে ধীরে আমরা হজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করতে পেরেছি। সমস্যাগুলো আমি জানতাম তাই তার সমাধান করা সহজ হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্য হলেও আপনারা দেখেছেন বায়তুল মোকাররম মসজিদে আগুন দেয়া, সেই মসজিদে বোমা মারা, শত শত কোরআন শরীফ পোড়ানো হয়েছে। কারা পুড়িয়েছে তা সবাই জানে। মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এটা কোন ধরনের রাজনীতি, কোন ধরনের ধর্মরক্ষা আমি জানি না। কিন্তু জামায়াত আর বিএনপি মিলে এই ধরনের হত্যাকাণ্ড করেছে।

নিজের ওপর গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো বারাবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছি। ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমি জানি না আল্লাহ তখন কীভাবে আমাকে রক্ষা করেছে। আমার দলের লোকজন আমাকে ঘীরে রেখেছিল। আমার গায়ে স্প্রিন্টার না লাগলেও দলের লোকদের গায়ে লেগেছে। অনেকেই ধীরে ধীরে মারা গেছে। আল্লাহ আমাকে দিয়ে কোনো কাজ করাবেন বলেই বাঁচিয়ে রেখেছেন।

তিনি বলেন, এই দেশে এমন একটা সময় ছিল যখন মানুষ একবেলাও খেতে পারতো না। বিদেশ থেকে পুরাতন কাপড় এনে তাদের পড়তে দেয়া হতো। এই দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে আমার বাবাকে বার বার কারাগারে যেতে হয়েছে। এই সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবার জন্যই তিনি দেশ স্বাধীন করেছিলেন। এই স্বাধীন দেশে কেউ না খেয়ে থাকবে না। বন্যায় বিলীন হওয়া প্রত্যেকটা মানুষকে যেন আমরা ঘর-বাড়ি তৈরি করে দিতে পারি সেজন্য দোয়া করবেন। এই দেশের মানুষের জন্য দোয়া করবেন। বাংলাদেশের মানুষে যেন সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে সেজন্য দোয়া করবেন।