• বৃহস্পতিবার , ২৫ এপ্রিল ২০২৪

টিআইবিকে হুমকি দেওয়াটা কতটা যুক্তিসম্মত?


প্রকাশিত: ২:২৫ এএম, ৩১ মে ১৪ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৯৮ বার

 

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিন এক অনুষ্ঠানে বললেন টিআইবির (ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ) মুখোশ উন্মোচন করা হবে। দুদকের মতো একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের কমিশনারের কাছ থেকে কি এ ধরনের হুমকি প্রত্যাশিত? দুদকের কাজ দুর্নীতি খুঁজে বের করা ও ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠাননির্বিশেষে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, কাউকে হুমকি দেওয়া নয়।
টিআইবি একটি দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন। দুদক কমিশনার বলেছেন, টিআইবি বিদেশ থেকে আনা টাকা গবেষণায় কতটা ব্যয় করেছে, তার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। সময় হলে এ বিষয়ে টিআইবির মুখোশ উন্মোচন করা হবে। এটা আমরা সবাই মানি যে কোনো প্রতিষ্ঠানই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নয়, দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান টিআইবিও নয়। ফলে টিআইবির তহবিল খরচের স্বচ্ছতা নিয়ে যদি প্রশ্ন থাকে, তবে তা নিয়ে তদন্ত হতেই পারে। কিন্তু সে ধরনের কোনো তদন্তে না গিয়ে একটি অনুষ্ঠানে টিআইবির মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে হুমকি দেওয়াটা কতটা যুক্তিসম্মত? টিআইবির তহবিল ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন থাকলে দুদক তা তদন্ত করে দেখছে না কেন? ‘সময় হলে মুখোশ উন্মোচন’ করার হুমকি কেন?
দুদক কমিশনার টিআইবির বিরুদ্ধে কেন খেপেছেন, সেটা পরিষ্কার। কারণ, দুর্নীতি দমনে দুদকের ব্যর্থতার বড় সমালোচক টিআইবি৷ তাদের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদনে এর উল্লেখ রয়েছে। হুমকি দেওয়ার যে সংস্কৃতি আমাদের দেশে রয়েছে, তার উদ্দেশ্য হচ্ছে ভয় দেখিয়ে কাউকে কোনো কাজ থেকে বিরত রাখা। হুমকি দিয়ে দুদক কি তবে তার ব্যর্থতার সমালোচনা থেকে টিআইবিকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে? দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান হিসেবে টিআইবি বরং দুদকের সহায়ক শক্তি হিসেবেই বিবেচিত হওয়া উচিত। বাংলাদেশে স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন, আইনের খসড়া তৈরি ও পরবর্তী সময়ে দুদকের ক্ষমতা খর্ব করার বিরুদ্ধে আমরা তো টিআইবিকে সব সময়ই সোচ্চার দেখেছি৷
হুমকি নয়, দুদকের কাছ থেকে জনগণ দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি দেখতে চায়। তা টিআইবি, অন্য যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিই হোক না কেন। আমরা চাই ‘সময়’ হওয়ার জন্য অপেক্ষা না করে দুদক বাছবিচারহীনভাবে সব ধরনের দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজের ‘মুখোশ উন্মোচনের’ সাহস দেখাক।