• শনিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৪

‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা খসড়া ২০১৪’


প্রকাশিত: ১০:১৩ পিএম, ১৬ এপ্রিল ১৪ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৪ বার

অনলাইন মিডিয়া পরিচালনা সংক্রাšত্ম নীতিমালার খসড়া চূড়াšত্ম করেছে সরকার। খসড়া এ নীতিমালা অনুযায়ী লাইসেন্সধারী অনলাইন পরিচালনকারী প্রতিষ্ঠান মাত্র ২০ শতাংশ বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে এবং বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ২ শতাংশ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।

নীতিমালায় অনলাইন মিডিয়া পরিচালনার জন্য লাইসেন্স ফি ধার্য করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। এছাড়া ফেরতযোগ্য আর্নেস্টমানি বাবদ দিতে হবে দুই লাখ টাকা।

খসড়া এ নীতিমালায় অনলাইন মিডিয়ার জন্য বাংলাদেশি হোস্টিং সার্ভার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া যেসব কন্টেন্ট এখানে আপলোড করা হবে সেগুলোকে ৯০ কার্যদিবস পর্যšত্ম সংরক্ষণ করার বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে কোনো স্থানীয় বা বিদেশি কোনো সাইটের লিংক ব্যবহার করা যাবে না মর্মে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

সম্প্রতি তথ্য মন্ত্রণালয় আইসিটি বিশেষজ্ঞ মো¯ত্মফা জাব্বারের নেতৃত্বে এ সংক্রাšত্ম একটি সাব-কমিটি গঠন করেছে। এই কমিটি ইতোমধ্যে খসড়া নীতিমালাটি মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। শিগগিরই এটি আšত্মঃমন্ত্রণালয় সংক্রাšত্ম কমিটিতে দাখিল করা হবে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যরা খসড়াটিকে অনুমোদন দিলে পরবর্তীতে তথ্য মন্ত্রণালয়েল ওয়েবসাইটে এটি প্রকাশ করা হবে।

দ্রুত সম্প্রসারিত অনলাইন মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতেই সরকার এই নীতিমালা প্রয়োগের সিদ্ধাšত্ম নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মতিউর রহমান খান ও আবুল হোসাইন।

তারা বলেন, খসড়া এই নীতিমালাটি বিবেচনাধীন রয়েছে। স্টেকহোল্ডারদের মতামত ছাড়া এ ব্যাপারে চূড়াšত্ম সিদ্ধাšত্ম নেয়া হবে না। সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন

‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালাÑ ২০১৪’ আমাদের কদের জন্য নিচে দেয়া হলো:-

১.০ পটভূমি:

বর্তমান সভ্যতাকে বলা হয় ইন্টারনেট সভ্যতা। ইন্টারনেট মানেই অনলাইন। এই সভ্যতায় আমাদের যাত্রাকে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে চিহ্নিত করেছি। আমাদের স্বপ্ন আমরা ২০২১ সালের মাঝে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবো। আমরা এই সময়ে হতে চাই একটি সমৃদ্ধ-উন্নত মধ্য আয়ের দেশ, যাতে থাকবেনা দারিদ্র, থাকবেনা অশিক্ষা বা বৈষম্য। আমরা সেই স্বপ্নকে পূরণ করতে চাই ডিজিটাল প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমরা এরই মাঝে আমাদের চারপাশের সবকিছুকে ডিজিটাল রূপান্তরের দিকে নিয়ে যাচ্ছি। সেই লক্ষ্য অর্জন এবং সার্বিকভাবে সারা দুনিয়ার মতো জাতিগতভাবে আমাদের ইন্টারনেট নির্ভরতাও প্রশ্নাতীত। ২০১৩ সালের জুন মাসের হিসাব অনুসারে দুনিয়ার ২৪০ কোটি ৫৫ লাখ ১৮ হাজার ৩৭৬ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করতো, যার শতকরা ৪৪ ভাগই এশিয়ার। বাংলাদেশের অবস্থা দুনিয়ার থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। এদেশে ২০১৩ সালের জুন মাসে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিলো ৩ কোটি ৫৯ লাখ।

প্রযুক্তিগত দিকে থেকেও ইন্টারনেট এখন আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখন মানুষের জীবনযাপন, তথ্য আদান- প্রদান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সরকার পরিচালনা, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ও পারস্পরিক সম্পর্কের সবচেয়ে বড় মাধ্যম ইন্টারনেট। লেখা, চিত্র ও শব্দ ও ইন্টারএ্যাকটিভিটি সহযোগে ইন্টারনেটে তথ্য ও উপাত্তকে এমনভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব যা আর কোন মাধ্যমেই তেমনটা সম্ভব নয়।  এটি একদিকে হতে পারে খবরের কাগজ, ব্যক্তিগত ডাইরী বা সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। অন্যদিকে ইন্টারএ্যাকটিভিটিসহ রেডিও, টিভি সম্প্রচারও এই প্রযুক্তিতে সম্ভব। এখনই বিভিন্ন ধরনের নিউজ পোর্টাল, নিউজ ব্লগ, আইপি টিভি, ইন্টারনেট রেডিও ইত্যাদি নানা ধরনের অনলাইন গণমাধ্যমের আবির্ভাব ঘটছে। দেশের বিদ্যমান কাগজ ও সম্প্রচারনির্ভর জাতীয় গণমাধ্যমগুলোও এখন ইন্টারনেটকে নির্ভর করছে এবং তাদের তথ্য-উপাত্ত ও সম্প্রচার ইন্টারনেটেও প্রকাশ করছে। ফলে ইতিমধ্যে বিরাজমান সকল গণ মাধ্যমের চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেছে অনলাইন গণ মাধ্যম। বস্তুত দেশে অনলাইন গণ মাধ্যমের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এটি দিনে দিনে আরও বাড়তেই থাকবে। সেই প্রেক্ষিতটির প্রতি লক্ষ্য রেখে এখনই একথা বলা যায় যে, অনলাইনে প্রকাশিত গণমাধ্যমের বিষয়টিকে আর অবহেলা করা যায়না।

বিদ্যমান অবস্থায় এইসব গণ মাধ্যম একদিকে কোন স্বীকৃতি বা সুযোগসুবিধা পায়না, অন্যদিকে গণমাধ্যমের জাতীয় মান রক্ষা করাও সম্ভব হচ্ছেনা। এটি এখন যেমন খুশি তেমন অবস্থায় চলছে। কোন আইন কানুন নিয়ম নীতি, নিবন্ধন ইত্যাদি এখানে বিদ্যমান নেই। এমন অবস্থা কোন মহলেরই কাম্য হতে পারেনা।

এজন্যেই জাতীয় অনলাইন গণ মাধ্যমের স্বীকৃতি, মান বজায় ও নীতিনৈতিকতা গড়ে তোলার জন্য একটি জাতীয় অনলাইন গণ মাধ্যম নীতিমালা প্রণীত হওয়া বাঞ্ছণীয়।

১.১    নীতিমালার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য

১.২.১ অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনার ব্যবস্থা অক্ষুণœ রেখে দেশের গণমাধ্যম ব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও গতিশীল করা;

১.২.২ অনলাইন গণ মাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতি ও মানদ- অনুসরণ, গণতন্ত্রের বিকাশ, বহুত্ববাদ ও বৈচিত্র্য সমুন্নত রাখা, সঠিকতা, নিরপেক্ষতা ও গণমুখীনতা বজায় রাখা এবং তথ্যের অবাধ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা;

১.২.৩ জনগণের মৌলিক অধিকার ও ব্যক্তি স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে গণমাধ্যমসমূহের অধিকতর স্বাধীনতা এবং দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণ;

১.২.৪ অনলাইন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ এবং এর মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান;

১.২.৫ সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় উন্মুক্ত ও সুষম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করা;

১.২.৬ সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে অনলাইন গণমাধ্যমকে আরো গতিশীল ও দক্ষ করে গড়ে তোলা;

১.২.৭ অনলাইন গণ মাধ্যমের সহায়তায় বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকা- বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ব্যবসা-বাণিজ্য, কর্মসংস্থান, রপ্তানী বৃদ্ধি, সরকারি সেবা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন, দারিদ্র বিমোচন ইত্যাদি কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা;

১.২.৮ সমাজের সকল ক্ষেত্রে সকল প্রকারের বৈষম্য নিরসন করে সমতার নীতি প্রতিষ্ঠায় অনলাইন গণমাধ্যমের ভূমিকা নিশ্চিত করা।

১.৩ নীতিমালার প্রধান দিকসমূহ

১.৩.১ অনলাইন সেবা প্রদানকারীদের লাইসেন্স প্রদান, পর্যবেক্ষণ এবং মান বজায় রাখার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা;

১.৩.২ লাইসেন্স প্রদানের মাধ্যমে সকল অনলাইন গণমাধ্যমকে একটি সমন্বিত ব্যবস্থার আওতায় এনে এ সেক্টরে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা;

১.৩.৩ জনস্বার্থ, মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আদর্শ ও চেতনা, সামাজিক মূল্যবোধ এবং রাষ্ট্রীয় নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে যাতে অনলাইন গণমাধ্যম সেবাদানকারী কর্তৃক অনুষ্ঠান তথ্য ও উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচার করা হয় তা নিশ্চিতকরণ;

১.৩.৪ বাংলাদেশের নারী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অনলাইন গণমাধ্যমের ভূমিকা নিশ্চিতকরণ;

১.৩.৫ অনলাইন গণ মাধ্যমের সহায়তায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত ব্যক্তির মৌলিক অধিকার ও সম্মান সমুন্নত রাখার বিষয়টি নিশ্চিতকরণ;

১.৩.৬ সমাজে নৈতিক অবক্ষয় রোধ ও সামাজিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাকরণ;

১.৩.৭ জনসচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র বিমোচনে অনলাইন গণমাধ্যমের অবদান নিশ্চিতকরণ;

১.৩.৮ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সমাজের সর্বত্র সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা;

১.৩.৯ অশ্লীলতা রোধ এবং সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী কোন বিজ্ঞাপন বা তথ্য- উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচার না করার মাধ্যমে সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণ, দেশীয় সাহিত্য, কৃষ্টি/ সংস্কৃতি উন্নয়নে সহায়তাকরণ।

১.৩.১০ সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদের বিস্তার রোধ ও প্রতিরোধে সহায়তা করা।

১.৪ নীতিমালার কৌশলসমূহ

১.৪.১ এ নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য সকল অংশীজন দের পরামর্শ গ্রহণ;

১.৪.২ এ নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গঠন করা;

১.৪.৩ অনলাইন গণমাধ্যম কমিশনের মাধ্যমে গণ- মাধ্যমের কর্মকা- সমন্বয় করা।

১.৫: সংজ্ঞা ও পরিধি

এই নীতিমালার আলোকে অনলাইন গণমাধ্যম বলতে বাংলা, ইংরেজি বা অন্য কোন ভাষায় জনগণের জন্য ইন্টারনেট মাধ্যমে ভিডিও, অডিও, টেক্সট বা মাল্টিমিডিয়ার অন্য কোন রূপে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে বোঝাবে।  এই ধরনের সকল প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা এই নীতিমালার পরিধিতে থাকবেন।

দ্বিতীয় অধ্যায়

অনলাইন গণমাধ্যম লাইন্সেন্স

২.১ লাইসেন্স প্রদান

২.১.১ সকল অনলাইন গণ মাধ্যমকে সরকারের নিকট হতে লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে; সরকার লাইসেন্স ফিস বাবদ নামমাত্র ফিস ধার্য্য করবে।

২.১.২ সরকার একটি লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের সহায়তায় নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট নিয়মে অনলাইন গণ মাধ্যমকে লাইসেন্স প্রদান করবে। বিদ্যমান অনলাইন গণমাধ্যমসমূহ শর্ত পূরণ সাপেক্ষে লাইসেন্স পাবে।

২.১.৩ সরকার অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে একটি স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক উন্মুক্ত স্বতন্ত্র আইন/ নীতিমালা/ বিধিমালা প্রণয়ন করবে। এতে লাইসেন্স প্রদান পদ্ধতি, লাইসেন্স প্রদানের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা, লাইসেন্স বাতিল ও অগ্রায়নের বিধান বর্ণিত থাকবে;

২.১.৪ এ সম্পর্কিত আইন/ নীতিমালা/ বিধিমালা প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার তথা তথ্য মন্ত্রণালয় এ সকল বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

২.১.৫ লাইসেন্সপ্রাপ্ত সকল অনলাইন গণ মাধ্যম সরকারের কাছে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য হবে এবং শর্ত পূরণ সাপেক্ষে সরকারি বিজ্ঞাপনসহ সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা পাবে।

তৃতীয় অধ্যায়

অনলাইনে তথ্য-উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার সংক্রান্ত নীতিমালা

৩.১ মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং তার ইতিহাস

৩.১.১ তথ্যের অবাধগম্যতা, শিক্ষার প্রসার, উন্নয়নমূলক কর্মকা-েসকলকে উদ্ধুদ্ধকরণ, নির্মল আনন্দদান ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা হবে অনলাইন গণমাধ্যমের তথ্য- উপাত্ত প্রকাশ ও সম্প্রচারের মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সংবাদ প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে এই নীতিমালা অনুসরণ করতে হবে;

৩.১.২ মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় আদর্শ ও নীতিমালা সমুন্নত রাখতে হবে;

৩.১.৩ স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাসসহ সর্বজন স্বীকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা গৌরবান্বিত করতে হবে।

৩.২ সংবাদ ও তথ্যমূলক বিষয়াদি

৩.২.১ অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত কোন তথ্য- উপাত্ত কোন প্রকার অসঙ্গতিপূর্ণ বিভ্রান্তিমূলক অসত্য তথ্য বা উপাত্ত দেয়া যাবেনা। সকল প্রকারের তথ-উপাত্তে উভয় পক্ষের যুক্তিসমূহ যথাযথভাবে উপস্থাপনের সুযোগ থাকতে হবে;

৩.২.২ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত নি¤œবর্ণিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানসমূহের তথ্য-উপাত্ত বাধ্যতামূলকভাবে প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করতে হবে। যথাঃ- জরুরী আবহাওয়া বার্তা, স্বাস্থ্য বার্তা, গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা, সরকার কর্তৃক জারীকৃত প্রেস নোট, সরকার কর্তৃক সময় সময় অনুমোদিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানসমূহ ইত্যাদি।

৩.৩ ভাষা, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় অনুভুতি

৩.৩.১ দেশীয় সংস্কৃতির অগ্রগতির জন্য বাংলাদেশের আবহমানকালের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভাবধারার প্রতিফলন, বাংলাদেশী সংস্কৃতির সঙ্গে জনসাধারণের নিবিড় যোগসূত্র স্থাপন এবং বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ধারাকে দেশপ্রেমের আদর্শে অনুপ্রাণিত করে দেশীয় সংস্কৃতির সুষ্ঠু প্রতিফলন করতে হবে;

৩.৩.২ ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীসমূহের সংস্কৃতির অগ্রগতির জন্য তাঁদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ভাবধারার সুষ্ঠু প্রতিফলন করতে হবে।

৩.৩.৩ সংস্কৃতির সমৃদ্ধির জন্য দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিল্প ও শিল্পীদের অনুসন্ধান ও আবিষ্কার করে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে হবে এবং জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে;

৩.৩.৪ রাষ্ট্র ভাষাকে যোগ্য মর্যাদায় সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠান এবং এই উদ্দেশ্যে সঠিক বাংলা বানান ও  উচ্চারণের একটি আদর্শ মান স্থাপনের চেষ্টা করতে হবে। সংবাদ পাঠ ও সকল অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনক্রমেই প্রমিত বানান বা উচ্চারণের মান শিথিল করা যাবে না; প্রয়োজনে আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা যাবে, তবে কোনক্রমেই কোন অঞ্চলের প্রতি কৌতুক বা পরিহাস করার জন্য আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা যাবেনা;

৩.৩.৫ সকল ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে;

৩.৩.৬ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় তথা সমাজ জীবনের সর্বক্ষেত্রে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের সমমর্যাদা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নারী সমাজ আমাদের জাতিকে প্রত্যয়দীপ্ত রাখার ব্যাপারে সত্যিকারের অর্থপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এর স্পষ্ট প্রতিফলন থাকতে হবে।

৩.৪ উন্নয়নমূলক কর্মকা-

৩.৪.১ উন্নয়নমূলক কর্মকা- বিশেষ করে স্বেচ্ছাভিত্তিক কাজের উদ্ধুদ্ধকরণ এবং এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আলোচনা অনুষ্ঠান ও উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ওপর যথাসম্ভব সচিত্র প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে হবে। শ্রমের মর্যাদা ও কায়িক পরিশ্রমের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং এজন্য কোন পেশা বা বৃত্তি যে অমর্যাদাকর নয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তা ফুটিয়ে তুলতে হবে;

৩.৪.২ কৃষি ও শিল্প ক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলার আন্দোলনে জনসাধারণকে অনুপ্রাণিত করতে হবে। বিশেষ করে কৃষক, শ্রমিক ও অন্যান্য কর্মীদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও দায়িত্ব পালনে উদ্ধুদ্ধ করতে হবে;

৩.৪.৩ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভয়াবহতা সম্পর্কে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন রাখতে ও এ সম্পর্কে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে তাদেরকে আগ্রহী করে তুলতে হবে। শালীনতা, রুচি ও দেশীয় কৃষ্টির প্রতি লক্ষ্য রেখে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত প্রদান করতে হবে;

৩.৪.৪ জনসাধারণকে দেশের শিল্পের উন্নয়নের ও দেশের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে উদ্ধুদ্ধ করে তুলতে হবে;

৩.৪.৫ যুব সম্প্রদায়ের সৃজনশীল চিন্তাধারা ও শক্তিকে কর্মক্ষেত্রে নিয়োগের পথনির্দেশনা দিতে হবে এবং তাদের সমস্যা সমাধানে ফলপ্রসু ইঙ্গিত প্রদান করতে হবে;

৩.৪.৬ নৈতিকতাবোধের উন্নয়ন, সামাজিক কুসংস্কার থেকে মুক্তি এবং সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ অবদমনের দায়িত্ব পালন করার লক্ষ্যে সকল প্রকার দুর্নীতি দমন ও সমাধানের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত থাকতে হবে;

৩.৪.৭ জাতীয় সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংশিষ্ট সকল কর্মচারী এবং জনসাধারণকে দায়িত্বশীল হওয়ার জন্য সচেতন করে তুলতে হবে।

৩.৫ তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার বিষয়ক সতর্কতা

৩.৫.১ শিশু বা নারীর প্রতি সহিংসতা, অসমমূলক আচরণ বা হয়রানীমূলক কর্মকান্ডকে উদ্ধুদ্ধ করে এমন অনুষ্ঠান প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবেনা;

৩.৫.২ শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক, মানবিক এবং নৈতিক গঠনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে এমন ধরণের অশ্লীল, তথ্যগতভাবে ভ্রান্ত বা ভাষাগতভাবে অশোভন কিংবা সহিংসতামূলক অনুষ্ঠান প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবেনা;

৩.৫.৩  কোন প্রকার অশোভন উক্তি/ আচরণ করা যাবে না এবং অপরাধীদের কার্যকলাপের কৌশল প্রদর্শন যা অপরাধ সংগঠনের ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি প্রবর্তনে সহায়ক হতে পারে এমন তথ্য উপাত্ত বা দৃশ্যাবলী প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবেনা;

৩.৫.৫ মানবিক অনুভূতিতে আঘাত করে এমন তথ্য-উপাত্ত, সত্যিকার হত্যাকা-, নৃশংস হত্যাকান্ড, দুর্ঘটনায় নিহত ও আত্মহত্যার মৃতদেহ এবং নির্যাতিত, ধর্ষিত এবং ব্যভিচার এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ কোন নারী বা শিশুর স্থির বা চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা যাবেনা;

৩.৫.৬ মানবিক অনুভূতিতে আঘাত করে করে এমন কোন মানুষ বা প্রাণী নির্যাতনের এমন দৃশ্য তথ্য উপাত্ত বা দৃশ্যাবলী প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবেনা;

৩.৫.৭ দেশী ও বিদেশী ছবি/ অনুষ্ঠানে অশ্লীল, হিংসাত্মক, সন্ত্রাসমূলক এবং দেশীয় সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের পরিপন্থী কোন তথ্য উপাত্ত বা দৃশ্যাবলী প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবেনা;

৩.৬ শিক্ষামূলক তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার

৩.৬.১ জনস্বার্থে দেশের শিক্ষার মান উন্নয়নে এবং দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিকট শিক্ষার আলো পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষামূলক তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করতে হবে।

৩.৬.২ একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে সহায়ক শিক্ষামূলক কর্মকা- বা তথ্য নির্ভর প্রতিবেদন প্রস্তুত বা প্রামাণ্য তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করতে হবে।

৩.৬.৩ দেশের প্রতিটি নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষর হতে সচেতন ও আগ্রহী করার জন্যে তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করতে হবে।

৩.৭ বিবিধ

৩.৭.১ প্রত্যেকটি অনলাইন গণ মাধ্যমের সুনির্দিষ্ট ও সম্পাদকীয় নীতিমালা থাকতে হবে;

৩.৭.২ সকল তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করার ক্ষেত্রে বা  সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ ও তার অধীন প্রণীত বিধি বা নীতিমালার পরিপন্থী কোন তথ্য উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচার করা যাবেনা।

চতুর্থ অধ্যায়

বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত নীতিমালা

৪.১ রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় বক্তব্য এবং বিজ্ঞাপন

৪.১.১ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, বিদেশী কুটনীতিক এবং জাতীয় বীরদের পণ্যের বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। তবে গণসচেতনতা ও সমাজ সংস্কারমূলক বিজ্ঞাপনে দেশের স্বনামধন্য নাগরিকদের সম্মতিক্রমে বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভূক্ত করা যাবে;

৪.১.২ বিজ্ঞাপনের ভাষা, দৃশ্য কিংবা নির্দেশনা কোন ধর্মীয় বা রাজনৈতিক অনুভূতির প্রতি পীড়াদায়ক হতে পারবে না। ধর্মীয় অনুভূতিকে ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্যের বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ইত্যাদি স্থানের ধর্মীয় স্থিরচিত্র কিংবা চলমান চিত্র প্রদর্শন করা যাবে না। তবে বিজ্ঞাপন চিত্রে ব্যবহৃত বিষয়বস্তুর প্রয়োজনে ধর্মীয় অনুভূতিকে আহত না করে এ ধরণের প্রতিষ্ঠানের চিত্র প্রকাশ বা প্রদর্শন বিবেচনা করা যেতে পারে;

৪.১.৩ বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের সাথে মতবিরোধ সৃষ্টি করতে পারে, এমন বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না;

৪.১.৪ বিভিন্ন ধর্ম বা মতাবলম্বীদের মধ্যে বিদ্বেষ বা বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে এমন বিজ্ঞাপন প্রচার প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না।

৪.২ পণ্য, পণ্যের মান এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ

৪.২.১ বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) এর তালিকাভুক্ত পণ্য সামগ্রীর বিজ্ঞাপন প্রচারের ক্ষেত্রে বিএসটিআই মান নিয়ন্ত্রণ সনদপত্র উপস্থাপন করতে হবে। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে (যেখানে প্রযোজ্য) সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মান নিয়ন্ত্রণ সনদপত্র উপস্থাপন করতে হবে;

৪.২.২ বিজ্ঞাপনে এমন কোন বর্ণনা বা দাবী প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না যাতে জনগণ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রতারিত হতে পারে;

৪.২.৩ বিজ্ঞাপনে প্রতিযোগী পণ্যের তুলনা বা নিন্দা করে শ্রেষ্ঠত্ব দাবী করা যাবে না। অন্য পণ্য সম্পর্কে বিজ্ঞাপনে অমর্যাদাকর কোন উক্তি করা যাবে না;

৪.২.৪ সংবাদের আকারে বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না। অনুষ্ঠান হতে বিজ্ঞাপন ভিন্নতর হতে হবে। নাটক বা কোন অনুষ্ঠানের ভিতরে বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু প্রত্যক্ষ করা যাবে না;

৪.২.৫ বিজ্ঞাপনের অডিও মানসম্মত এবং শ্র“তিমধুর হতে হবে, অতি কোলাহলপূর্ণ ও কর্ণপীড়াদায়ক হবে না। বিজ্ঞাপনে নোংরা ও অশ্লীল শব্দ, উক্তি, সংলাপ, জিংগেল ও গালিগালাজ ইত্যাদি অন্তর্ভূক্ত করা যাবে না;

৪.২.৬ কোন দেশী- বিদেশী গান বা গানের অংশ বা গানের সুর সুরকার ও স্বত্বাধিকারীর অনাপত্তি নিয়ে বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করা যেতে পারে;

৪.২.৭ কোন ধরণের নকল বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না;

৪.২.৮ ঔষধ জাতীয় পণ্য, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনেষ্টিক সেন্টার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদির বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অথবা তার অধীনস্থ অধিদপ্তরের অনুমোদন/ ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে;

৪.২.৯ বিজ্ঞাপন চিত্রে পেশাগত পরামর্শ পরিহার করতে হবে। ঔষধপত্র, চিকিৎসা বিষয়ক পণ্যের বিজ্ঞাপনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসকদের বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরামর্শ প্রদান করা যাবে না এবং তাদের পরিচয় প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না। অনুরূপভাবে অন্যান্য ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত পণ্যের বিজ্ঞাপনে পেশাগত পরামর্শ পরিহার করতে হবে। তবে, সচেতনতামূলক বিজ্ঞাপন যেমন- এইডস, ডায়রিয়া, ডেংগু, যক্ষ্মা, মহামারি ইত্যাদি প্রতিরোধ, মাদক নিয়ন্ত্রণ, এসিড নিক্ষেপ প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনুমতিক্রমে পরিচয়সহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের পেশাগত পরামর্শ দেখানো যেতে পারে;

৪.২.১০ দেশে উৎপাদিত তথা দেশীয় বা সেবার বিজ্ঞাপনে দেশীয় মডেল ব্যবহার করতে হবে। তবে, দেশীয় পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে সীমিত সংখ্যক বিদেশী মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে;

৪.২.১১ বিদেশে উৎপাদিত পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপনে বিদেশী মডেল ব্যবহার করা যেতে পারে;

৪.২.১২ পরিবেশ বিনষ্টকারী বা বন্ধুসুলভ নয় এমন দৃশ্য বিজ্ঞাপনে দেখানো যাবে না;

৪.২.১৩ রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ ভবন, স্থাপনা, কার্যালয়, যেমন- জাতীয় সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, কোর্ট বা আদালত ও আদালতের কার্যক্রম, সেনানিবাস এলাকা, শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি কোন পণ্যের বিজ্ঞাপনচিত্রে প্রদর্শন করা যাবে না।

৪.৩ বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা এবং সংস্কৃতি

৪.৩.১ মহান স্বাধীনতা দিবস, মুক্তিযুদ্ধ, গণঅভ্যুত্থান, ভাষা আন্দোলন ইত্যাদি পর্যায়ের বিষয়গুলোর মর্যাদা ও সম্মান সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে এ বিষয়গুলো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বিজ্ঞাপনচিত্রে অন্তর্ভূক্ত করা যাবে না;

৪.৩.২ কোন বিজ্ঞাপন শোভনীয়, সুন্দর, সুরুচিপূর্ণ ও পরিমার্জিত কিনা এ বিষয়ে কোনরূপ দ্বিধা/ সন্দেহ দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট টিভি চ্যানেলকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

৪.৩.৩ বাংলাদেশের সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ নয় এবং যা শিশু- কিশোর এবং যুব সমাজের মধ্যে হতাশা বা সংস্কৃতিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে সেই ধরণের বিজ্ঞাপন গ্রহণযোগ্য হবে না। কিশোর বা যুব সমাজ অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় হয় এবং শারিরীক অক্ষম বা দৈহিক বর্ণকে কেন্দ্র করে কোন বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না এবং শ্রমের মর্যাদা থেকে বিরত রাখার কোন ধারণাকে গ্রহণ করা যাবে না;

৪.৩.৪ বিজ্ঞাপন দেশের প্রচলিত আইন, রীতি- নীতি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। বিজ্ঞাপনে রাষ্ট্রীয় অখ-তা বা সংহতি বিনষ্ট হয় এমন কোন মনোভাব প্রদর্শন করা যাবে না;

৪.৩.৫ অংশগ্রহণকারী মডেলদের পোষাক- পরিচ্ছদ শালীনতাপূর্ণ ও সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

৪.৪ শিশু এবং নারীর অধিকার

৪.৪.১ বিজ্ঞাপনে শিশুদের পরনিন্দা, বিবাদ, কলহের দৃশ্য পরিহার করতে হবে ও চরিত্র গঠনের সুশিক্ষা প্রদানের দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে;

৪.৪.২ শিশুদের নৈতিক, মানসিক বা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে এমন বিষয়কে বিজ্ঞাপনে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। শিশুদের স্বাভাবিক বিশ্বাস ও স্বভাব সুলভ সরলতার সুযোগকে প্রতারণাপূর্ণ ও চাতুর্য্যরে সাথে কাজে লাগিয়ে কোন বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য হাসিলের প্রয়াস গ্রহণযোগ্য হবে না;

৪.৪.৩ গুঁড়ো দুধের বিজ্ঞাপনে ৫ (পাঁচ) বছরের কম বয়সের শিশুদের মডেল হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না কিংবা ছবি প্রদর্শন করা যাবে না। এছাড়া গুঁড়ো দুধের বিজ্ঞাপনে নি¤œলিখিত দুইটি বাক্য পৃথকভাবে সুপার ইম্পোজ করে সুস্পষ্টাক্ষরে দেখাতে হবেঃ

ক) সম্প্রচারের ক্ষেত্রে “শিশুদের জন্য মায়ের দুধের বিকল্প নেই’’- কমপক্ষে ৫ সেকেন্ড দেখাতে হবে। প্রকাশনার ক্ষেত্রে এই বাক্যটি গুরুত্বপূর্ণভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। প্রকাশনার ক্ষেত্রে এই বাক্যটি গুরুত্বপূর্ণভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

খ) সম্প্রচারের ক্ষেত্রে “এই গুঁড়ো দুধ এক বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য নয়”- কমপক্ষে ৫ সেকেন্ড দেখাতে হবে। প্রকাশনার ক্ষেত্রে এই বাক্যটি গুরুত্বপূর্ণভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

৪.৪.৪ শিশুদের বিজ্ঞাপনে এমন কিছু প্রচার করা যাবে না যা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে এবং সরাসরিভাবে শিশুদেরকে প্রলুব্ধ করে এবং তাদের শারীরিক এবং মানসিক গঠন ব্যাহত করে;

৪.৪.৫ যে কান খাদ্য বা পানীয় এর বিজ্ঞাপনে উক্ত খাদ্য বা পানীয়ের পুষ্টি ও খাদ্য গুণ এবং স্বাস্থ্যগত প্রভাব সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং সুপার ইম্পোজ করে স্পষ্টাক্ষরে দেখাতে হবে; প্রকাশনার ক্ষেত্রে এইসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

৪.৪.৬ বিজ্ঞাপনে শিশুদের দ্বারা বিপদজনক কোন দ্রব্য যেমন- বিস্ফোরক, দিয়াশলাই, প্রেট্রোল বা দগ্ধকারক দ্রব্য, যন্ত্র বা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, ঔষধপত্র ইত্যাদি ব্যবহারের দৃশ্য দেখানো যাবে না। যে কোন পরিস্থিতিতে বিজ্ঞাপনচিত্রে শিশুদের অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্য দেখানো যাবে না;

৪.৪.৭ বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রকাশ ও সম্প্রচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত চর্চা এবং যৌক্তিক বিরতির সময়সীমা অনুসরণ করতে হবে। এই বিষয়ে কোন অভিযোগ আসলে অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিবে;

৪.৪.৮ বিজ্ঞাপনচিত্রে ভয়- ভীতি সৃষ্টিকারী কোন কিছু প্রদর্শন করা যাবে না। ফাঁসি, শ্বাসরোধ, আত্মহত্যা, অঙ্গবিচ্ছেদ ইত্যাদি বীভৎস দৃশ্য দেখানো যাবে না। শিশু, কিশোর, বৃদ্ধ বা অসুস্থ ব্যক্তির ¯œায়ুর উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে এরূপ প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার যাবে না;

৪.৪.৯ বিজ্ঞাপনে ধর্ষণ, ব্যভিচার, অশ্লীল ছবি বা চলচ্চিত্র দেখানো, নারী নির্যাতন, নারীর প্রতি সহিংসতা বা তাঁদের প্রতি শারীরিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করে, কিশোরী ও মহিলাদের উত্যক্তকরণ এবং তাঁদের প্রতি অশোভন অঙ্গভঙ্গীতে উৎসাহ দেয় এই ধরনের বিজ্ঞাপন বা বিজ্ঞাপন চিত্র প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যাবে না।

৪.৫ বিবিধ

৪.৫.১ বিজ্ঞাপনে সশস্ত্র বাহিনী অথবা দেশের আইন- শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অন্য কোন বাহিনীর প্রতি অশোভন কটাক্ষ, বিদ্রুপ বা অবমাননা করা যাবে না। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে নির্মিত কোন একটি পণ্যের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসাবে প্রতিরক্ষা বাহিনী, পুলিশ বা অন্য কোন আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের প্রদর্শন করা যাবে না। তবে, জনস্বার্থে জনসচেতনতা ও সমাজ সংস্কারমূলক বিজ্ঞাপনে প্রয়োজনবোধে এসব বাহিনীর লোকদের বিজ্ঞাপনচিত্রে অনুমতিক্রমে অন্তর্ভূক্ত করা যেতে পারে। আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিজস্ব কোন ঘোষণা বা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বিজ্ঞাপন হিসাবে প্রচার, প্রকাশ বা সম্প্রচার করা যেতে পারে;

৪.৫.২ বিজ্ঞাপনে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নৈতিক বোধের উন্নয়ন, সামাজিক কুসংস্কার থেকে মুক্তি এবং সমাজ বিরোধী কার্যকলাপ রোধ করার সুস্পষ্ট দিক নির্দেশনা থাকতে হবে;

৪.৫.৩ অনলাইন গণ মাধ্যমকে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে নিজ দায়িত্বে বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত ছাড়পত্র গ্রহণ করতে হবে এবং এক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন নীতিমালা সঠিকভাবে অনুসরণ না করা হলে সরকার সংশ্লিষ্ট গণ মাধ্যমের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে;

৪.৫.৪ বৈজ্ঞানিক শব্দাবলী, পরিসংখ্যান, উদ্বৃতি ইত্যাদি বিজ্ঞাপনে ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে, যেন সাধারণ দর্শকদের নিকট বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হয়। পরবর্তীতে সৃষ্ট কোন জটিলতার জন্য বিজ্ঞাপনদাতাকে দায়- দায়িত্ব বহন করতে হবে;

৪.৫.৫ বিজ্ঞাপন শোভনীয়, সুন্দর, সুরুচিপূর্ণ ও পরিমার্জিত হতে হবে;

৪.৫.৬ স্যানিটারী ন্যাপকিন, কনডম প্রভৃতিসহ জন্ম নিয়ন্ত্রণ সামগ্রীর বিজ্ঞাপন প্রচারকালে বিজ্ঞাপনের ভাষা, দৃশ্য ও সংলাপ মার্জিত ও শোভনীয় হতে হবে;

৪.৫.৭ নি¤েœবর্ণিত পণ্য ও সেবার বিজ্ঞাপন প্রচারযোগ্য বিবেচিত হবে নাঃ

১. বাংলাদেশ ব্যাংকের ছাড়পত্র বিহীন/ অননুমোদিত অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান;

২. পত্র মিতালী ক্লাব, নাইট ক্লাব, বার, সামাজিকভাবে স্বীকৃত নয় এমন ক্লাব বা সমিতি;

৩. ভাগ্য গণনাকারী ও এতদসংক্রান্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান;

৪. লাইসেন্স বিহীন ব্যবসায় কর্মকা- এবং কর্মসংস্থান প্রতিষ্ঠান/ সার্ভিস/ ব্যুরো;

৫. বাজি ধরা, জুয়া খেলা বা এতদসংক্রান্ত সংস্থা/ কোম্পানী/ ব্যক্তি;

৬. সিগারেট, বিড়ি, চুরুট ইত্যাদি তামাকজাত পণ্য;

৭. মদ, গাঁজা, চরস, হেরোইন ইত্যাদি মাদক/ নেশা জাতীয় পণ্য;

৮. এলকোহল মিশ্রিত এবং নেশা জাতীয় পণ্য (এলকোহলের পরিমাণ যাই হোক না কেন);

৯. মহিলাদের বক্ষ বর্ধন, পুরুষ ও মহিলাদের বা শিশু কিশোরদের সিøমিং, ওজন হ্রাস অথবা সীমিতকরণ, ফিগার নিয়ন্ত্রণ এর জন্য ব্যবহৃত অননুমোদিত ঔষধপত্র অথবা চিকিৎসা, যৌন দুর্বলতা, অকাল বার্ধক্য ইত্যাদি বিষয়ক বিশেষ চিকিৎসা, স্বপ্নে প্রাপ্ত ঔষধ, মাদুলী, কবজ, যাদু ইত্যাদি;

১০.  অবৈধ চাঁদা বা  বে আইনী চাঁদা আদায় সংক্রান্ত;

১১. ব্যবসা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিবাদ সংক্রান্ত ইত্যাদি;

১২. সরকারের অনুমোদনবিহীন আবাসিক ভবন বা স্থাপনা সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন।

১৩. মেধাস্বত্ত্ব লঙ্ঘনকারী কোন পণ্য;

৪.৫.৮ এ নীতিমালায় উল্লেখ নাই এমন বিষয়ে অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন সিদ্ধান্ত দিবে। সম্প্রচার কমিশন গঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই সকল বিষয়ে সরকার প্রচলিত নিয়মানুসারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। এমতাবস্থায়, বিজ্ঞাপনদাতা  অনলাইন গণ মার্ধ্যমের মধ্যে বিজ্ঞাপন বিষয়ে মতবিরোধ হলে সরকারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

পঞ্চম অধ্যায়

তথ্য উপাত্ত প্রকাশ বা সম্প্রচারের অনুপযুক্ততা

৫.১.১ এই নীতিমালায় প্রণীত অনুষ্ঠান এবং বিজ্ঞাপন নীতিসমূহ অনুসরণে ব্যর্থতা;

৫.১.২ জাতীয় আর্দশ বা উদ্দেশ্যের প্রতি কোন প্রকার ব্যঙ্গ বা বিদ্রুপ, বাংলাদেশের জনগণের প্রতি অবমাননা বা ব্যঙ্গ কিংবা বাংলাদেশের জনগণের জাতীয় চরিত্রের প্রতি কটাক্ষ অথবা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের অখ-তা বা সংহতি ক্ষুণœ হতে পারে এমন প্রবণতা;

৫.১.৩ বিচ্ছিন্নতা বা অসন্তোষ সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতি বা শ্রেণী বিদ্বেষ প্রচার, কোন ধর্মের প্রতি বিদ্রুপ, অবমাননা বা আক্রমণ, বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়, বর্ণ বা মতাবলম্বীদের মধ্যে বিদ্বেষ বা বিভেদ সৃষ্টি;

৫.১.৪ কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত বা গোপনীয় বা মর্যাদা হানিকর তথ্য প্রচার করা যাবে না। তবে, এমন কোন তথ্য যা গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থকে সরাসরিভাবে ক্ষুণœ করে, সেই সকলক্ষেত্রে সেই ব্যক্তি কর্তৃক সংগঠিত জনস্বার্থবিরোধী কর্মকা- সংক্রান্ত তথ্য গোপনীয়তার আওতায় পরবে না;

৫.১.৫ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘিœত হতে পারে এমন ধরণের সামরিক বা সরকারি গোপন তথ্য ফাঁস;

৫.১.৬ ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত সৃষ্টি করতে পারে, আইন- শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে উৎসাহ প্রদান করতে পারে, এবং আইন- শৃঙ্খলা ভঙ্গের প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি করে এমন ধরনের অনুষ্ঠান বা বক্তব্য;

৫.১.৭ সশস্ত্র বাহিনী অথবা দেশের আইন- শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত দায়িত্বশীল অন্য কোন বাহিনীর প্রতি কটাক্ষ, বিদ্রুপ বা অবমাননা, অপরাধ নিবারণ ও নির্ণয়ে অথবা অপরাধীদের দন্ডবিধানে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের হাস্যাস্পদ করে তাদের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করে এমন দৃশ্য প্রদর্শন বা বক্তব্য প্রদান;

৫.১.৮ কোন বিদেশী রাষ্ট্রের অনুকুলে এমন ধরণের প্রচারণা যা বাংলাদেশ ও সংশ্লিষ্ট দেশের মধ্যে বিরোধের কোন একটি বিষয়কে প্রভাবিত করতে পারে কিংবা একটি বন্ধুভাবাপন্ন বিদেশী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এমন ধরণের প্রচারণা যার ফলে সেই রাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা সৃষ্টি হতে পারে;

৫.১.৯ কোন জনগোষ্ঠী, জাতি বা দেশের মর্যাদা বা ইতিহাসের ক্ষতিকর ঘটনা/ দৃশ্য বিন্যাস বা ঐতিহাসিক তথ্যের বিকৃতি;

৫.১.১০ ধর্ষণ, ব্যভিচার, নারী ও শিশুর উপর অপরাধমূলক আক্রমণ, নারী ও শিশুদের নিয়ে অবৈধ ব্যবসা, উত্যক্তকরণ, পতিতাবৃত্তি এবং দালালী, কামুক বা অশোভন দেহভঙ্গী, নৈতিক মান অনুযায়ী গ্রাহ্য শয্যাদৃশ্যের বহির্গত কোন দৃশ্য সংযোজন;

৫.১.১১ শারীরিক নিগ্রহ অথবা মাত্রাতিরিক্ত প্রসব বেদনা প্রদর্শন, যৌন ব্যাধি, অতিমাত্রায় রক্তক্ষরণ, জখম ও ছেদন ইত্যাদি দৃশ্য, সত্যিকার ফাঁসিতে লটকানো বা বীভৎস হত্যাকা-, শ্বাসরোধ করে এবং আত্মহত্যার দৃশ্য প্রদর্শন;

৫.১.১২ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কোন বিদ্রোহ, নৈরাজ্য এবং হিংসাত্মক ঘটনা প্রদর্শন করা;

৫.১.১৩ আইন- শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে বা আইন অমান্য করার পক্ষে সহানুভুতি সৃষ্টি করে এমন কিছু দেখানো।

ষষ্ঠ অধ্যায়

অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন

৬.১ অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন গঠন

৬.১.১ অনলাইন গণ মাধ্যমের লাইসেন্স প্রদান, গুণগত মান নিশ্চিতকরণ সম্প্রচারে অন্যায্য ও অনুচিত বিষয়াদি পরিহারকরণ এবং গোপনীয়তা ক্ষুণœ করে এমন বিষয়াদি পরিহারের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ এবং পরিবীক্ষণের জন্য একটি অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন কমিশন গঠিত হবে;

৬.১.২ অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন সম্প্রচারিত তথ্য-উপাত্ত প্রচারিত, প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত বিষয় এবং বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত মান সম্পর্কে জনগণের অভিযোগ গ্রহণ এবং তা নিষ্পত্তিকরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন;

৬.১.৩ এই কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হবে;

৬.১.৪ এই কমিশনে একজন চেয়ারম্যান এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্য থাকবে;

৬.১.৫ চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণ তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত একটি অনুসন্ধান কমিটি দ্বারা নির্বাচিত হবেন এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। অনুসন্ধান কমিটি অংশীজনদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করবে যার মধ্যে থাকবে নারী একটিভিস্ট, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, শিক্ষক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বাক- স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও আইনজ্ঞ।

৬.১.৬ কমিশন নি¤œবর্ণিত দায়িত্ব পালন করবে:

১. অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন কর্তৃক জারীকৃত নিয়মাবলী যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কিনা তা ধারাবাহিকভাবে মনিটর করবে;

২. অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন সকল গণ মাধ্যম প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে প্রকাশিত বা প্রচারিত অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্পর্কিত সাপ্তাহিক/ পাক্ষিক/ মাসিক/ বার্ষিক প্রতিবেদন গ্রহণ করে তা তথ্য মন্ত্রণালয়ের নিকট পেশ করবে;

৩. অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন প্রয়োজন মনে করলে যে কোন  অনলাইন গণ মাধ্যম প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করতে পারবে;

৪. এ কমিশন কোন অনলাইন গণ মাধ্যম প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান ও সংবাদ সম্প্রচারের অনুপযোগী ও নীতিমালার পরিপন্থী মনে করলে সংশ্লিষ্ট অনলাইন গণ মাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানর নির্দেশ দিতে পারবে এবং এতদসংক্রান্ত প্রতিবেদন সরকারের নিকট পেশ করবে;

৫. সম্প্রচার কমিশন ও নীতিমালার পরিপন্থী কার্যক্রম গ্রহণ এবং দেশের বিদ্যমান আইন ও বিধিবিধান লংঘনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে বা স্বপ্রণোদিতভাবে যে কোন সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ করতে পারবে;

৬. কমিশন আইনের বাস্তবায়ন বা পরিবর্তনের জন্য বা পরিবর্ধনের জন্য, নীতিমালা প্রণয়ন এবং পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাসঙ্গিক অংশীজন দের পরামর্শ গ্রহণ করবে।

৬.২ অনুসরণীয় নিয়মাবলী

৬.২.১ অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন অনলাইন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের জন্য একটি অনুসরণীয় নিয়মাবলী তৈরী করবে এবং সময়ে সময়ে অংশীজনদের সাথে পরামর্শক্রমে তা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করবে। এ নিয়মাবলী প্রণয়নের ক্ষেত্রে কমিশন নি¤œবর্ণিত বিষয়সমূহ নিশ্চিত করবে:

(ক) প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান্যে অন্যায্য এবং অনুচিত বিষয়সমূহ পরীবিক্ষণ;

(খ) অযৌক্তিক/ অসমর্থিতভাবে গোপনীয়তা ক্ষুণœ করে এমন বিষয়াদি পরিহার;

(গ) প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের সুনির্দিষ্ট তথ্য উন্মুক্তকরণ নীতিমালা ও সম্পাদকীয় নীতিমালা অনুসরণ নিশ্চিতকরণ।

৬.৩ অভিযোগ ও নিষ্পত্তি

৬.৩.১ যে কোন প্রতিষ্ঠানের কোন তথ্য-উপাত্ত বা সম্প্রচার যদি কোন নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের অধিকার ক্ষুণœ করে তাহলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশনের নিকট তথ্য উপাত্ত প্রকাশের বা অনুষ্ঠান প্রচারের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে অভিযোগ দাখিল করতে পারবে;

৬.৩.২ অনলাইন গণ মাধ্যম কমিশন প্রাপ্ত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করে ও উভয় পক্ষের শুনানি করে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং সরকারের নিকট প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে;

৬.৩.৩ অভিযোগ প্রমাণিত হলে সরকার আইন/ বিধি দ্বারা নির্ধারিত শাস্তির বিধান করতে পারবে।

৭. নীতিমালার হালনাগাদকরণ

এই নীতিমালা যে কোন সময়ে অংশীজনদের সাথে আলোচনা করে তাদের মতামত নিয়ে হালনাগাদ করা যাবে। প্রয়োজনে প্রাসঙ্গিক নীতিমালার সাথে এই িিনতমালা সংযুক্ত হতে পারবে।

স্থানীয় সময়: ১৩৩৯ ঘণ্টা, ১৬ এপ্রিল ২০১৪