• শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

জনপ্রিয় উইন্ডোজ এক্সপির সব হালনাগাদশেষ শেষ হয়ে যাচ্ছে


প্রকাশিত: ৮:৪৫ পিএম, ৭ এপ্রিল ১৪ , সোমবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৫ বার

অনলাইন ডেস্ক:

২০০১ সালে এক্সপি উন্মোচনের সময় মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসকাল ৮ এপ্রিল, শেষ হয়ে যাচ্ছে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জনপ্রিয় উইন্ডোজ এক্সপি অপারেটিং সিস্টেমের পথচলা। কাল থেকেই এক্সপির সব হালনাগাদ সেবা বন্ধ করে দেবে মাইক্রোসফট। এক যুগেরও আগের এ অপারেটিং সিস্টেমটির ব্যবহার বন্ধ করে নতুন সংস্করণে আপডেট করার পরামর্শ দিচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। সাইবার দুর্বৃত্তদের কবল থেকে রক্ষা পেতে দ্রুত এক্সপি হালনাগাদ করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

মাইক্রোসফটের পক্ষ থেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে, এক্সপির হালনাগাদ বন্ধ হলে অ্যান্টিম্যালওয়্যার সিস্টেমের সমর্থন কার্যকর থাকবে না। প্রযুক্তি-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক্সপি থেকে উইন্ডোজের নতুন সংস্করণে আপগ্রেড করে নিলে বেশ কিছু নতুন সুবিধা পাওয়া যায়। এক্সপিতে অ্যাপ্লিকেশন চালানো, ই-মেইল, ওয়েবসাইটে দেখার কাজ ভালোভাবে করা গেলেও যেসব সুবিধা বা ফিচার উইন্ডোজের নতুন অপারেটিং সিস্টেমে একে একে আসছে, সেগুলো দিয়ে এক্সপির চেয়েও অনেক বেশি কাজ পাওয়া সম্ভব।

এক্সপি নিয়ে কী করবেন?
অনেকদিন ধরেই উইন্ডোজ এক্সপি থেকে পরবর্তী কোনো সংস্করণের অপারেটিং সিস্টেমে (ওএস) আপগ্রেড করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে মাইক্রোসফট। যাঁরা এখনও উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহার করছেন কালকের পর থেকেই তাঁরা ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার আক্রমণের জন্য উন্মুক্ত হয়ে পড়তে পারেন বলে মাইক্রোসফটের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন। কারণ, উইন্ডোজ এক্সপির নিরাপত্তার জন্য মাইক্রোসফট সিকিউরিটি এসেনশিয়াল সফটওয়্যারের কোনো সংস্করণ ৮ তারিখের পর মাইক্রোসফটের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে না। যাঁরা এক্সপি ব্যবহার করছেন তাঁদের জন্য মাইক্রোসফটের পরামর্শ হচ্ছে এক্সপি থেকে পিসি অন্য কোনো অপারেটিং সিস্টেমে হালনাগাদ করে নেওয়া বা নতুন কোনো হালনাগাদ ওএসযুক্ত পিসি কিনে ফেলা।

অবশ্য মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের সর্বশেষ সংস্করণ উইন্ডোজ ৮.১ পিসিতে ইনস্টল করতে পুরোনো সংস্করণের হার্ডওয়্যারের তুলনায় কিছু হালনাগাদ হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হতে পারে।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, উইন্ডোজের হালনাগাদ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করতে পিসি সর্বনিম্ন সিস্টেম দাঁড়াতে হবে এক গিগাহার্টজের প্রসেসর, এক গিগাবাইটের মেমোরি, ১৬ গিগাবাইটের হার্ডড্রাইভ, অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস ডাইরেক্ট এক্স৯ সমর্থনযোগ্য গ্রাফিকস কার্ড এবং উইন্ডোজ ডিসপ্লে ড্রাইভার মডেল সফটওয়্যার।

মাইক্রোসফট জানিয়েছে, যারা এক্সপি থেকে আপগ্রেড করে নিতে চান তাদের জন্য মাইক্রোসফটের ওয়েবসাইটে একটি টিউটোরিয়াল দেওয়া হয়েছে এবং আপগ্রেড করে নেওয়ার প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা সাইট থেকে পাওয়া যাবে। পিসি উইন্ডোজের সর্বশেষ সংস্করণ সমর্থন করবে কিনা তাও পরীক্ষা করে দেখা যাবে।

মাইক্রোসফট সার্ভিস বন্ধ করে দেওয়ার আগে উইন্ডোজ এক্সপির জনপ্রিয়তা ২৭ শতাংশতবে যাঁরা উইন্ডোজ হালনাগাদ করতে পারবেন না বা নতুন পিসি কিনতে পারবেন না তাদের জন্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে থার্ড পার্টি বা তৃতীয় পক্ষের নিরাপত্তা সফটওয়্যার ব্যবহার করে এক্সপির ব্যবহার চালিয়ে যেতে পারেন। তবে উইন্ডোজ এক্সপির জন্য নিরাপত্তা সফটওয়্যার বা এর প্রয়োজনীয় উপকরণ পাওয়ার জন্য খুব কম সাইট, প্রোগ্রাম বা সেবা খুঁজে পাওয়া যাবে।

যাঁদের পিসিতে হার্ডওয়্যারের কারণে হালনাগাদ উইন্ডোজ সমর্থন করবে না তাঁদের ওপেন সোর্স লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।

নতুন সব প্রযুক্তির ভিড়ে একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এক্সপি এখন অনেকটাই সেকেলে। ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও এক্সপি বেশ বিপজ্জনক।

মাইক্রোসফট সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে উইন্ডোজ ৮-এর তুলনায় উইন্ডোজ এক্সপি-চালিত সিস্টেমে ম্যালওয়্যার আক্রান্তের হার ছিল ৬ গুণ বেশি। বিশ্বের গড়পড়তা তুলনামূলক সূচকে বাংলাদেশে আক্রান্তের এই হার ছিল অনেক বেশি। বাংলাদেশে তীব্রতার দিক থেকে এগিয়ে আছে বিভিন্ন ট্রোজান হর্স, এরপর আছে ওয়ার্ম এবং ভাইরাস।

এক্সপি-সংক্রান্ত সব ধরনের নিরাপত্তা হালনাগাদ, হটফিক্স এবং ব্যবহার-সংক্রান্ত সব সেবা বন্ধ হওয়ার পর আর কোনো ধরনের কারিগরি সহযোগিতা পাওয়া যাবে না। এক্সপি সহযোগিতা পুরোপুরি বন্ধ হলে কী ঘটবে, এ থেকেই অনেকটাই অনুমান করা যায়। হ্যাকার এবং স্প্যামাররা নতুন ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি বের করে প্রতিরক্ষাব্যবস্থায় হামলা চালায়, কর্তৃপক্ষ সেগুলো চিহ্নিত করে সময়ে সময়ে সিস্টেম হালনাগাদের মাধ্যমে আক্রমণ প্রতিহত করে। কিন্তু যখন এক্সপির আর কোনো ধরনের নিরাপত্তাজনিত হালনাগাদ পাওয়া যাবে না, স্বাভাবিকভাবেই নিরাপত্তাব্যবস্থা হয়ে উঠবে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।