• শুক্রবার , ১৯ এপ্রিল ২০২৪

চিত্তরঞ্জন সাহার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রকাশনাকে শিল্পের মর্যাদা দিতে হবে:প্রকৌ.মেহেদী হাসান


প্রকাশিত: ১১:৩১ পিএম, ২৪ জানুয়ারী ১৮ , বুধবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৮৬ বার

একুশে পদকপ্রাপ্ত মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত চিত্তরঞ্জন সাহার স্মরণসভায়ইমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বাংলাপ্রকাশের প্রকাশক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান, আরিফ হোসেন, মাজহারুল ইসলাম,মফিদুল হক, চিত্তরঞ্জন সাহার স্ত্রী শ্রীমতি বিজলি প্রভাস সাহা
একুশে পদকপ্রাপ্ত মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত চিত্তরঞ্জন সাহার স্মরণসভায় ইমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, বাংলাপ্রকাশের প্রকাশক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান, আরিফ হোসেন, মাজহারুল ইসলাম,মফিদুল হক, চিত্তরঞ্জন সাহার স্ত্রী শ্রীমতি বিজলি প্রভাস সাহা

বিশেষ প্রতিনিধি  :  সৃজনশীল সাহিত্যের অগ্রপথিক, প্রকাশনা শিল্পের অগ্রদূত একুশে পদকপ্রাপ্ত ব্যক্তিত্ব মুক্তধারার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত চিত্তরঞ্জন সাহার আজ দশম মহাপ্রয়াণ দিবস। এ উপলক্ষ্যে আজ বিকেলে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এবং বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি’র যৌথ উদ্যোগে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এই স্মরণসভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এতে সভাপতিত্ব করেন লেখক ও  প্রকাশক মফিদুল হক। সভার মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন চিত্তরঞ্জন সাহার স্ত্রী শ্রীমতি বিজলি প্রভাস সাহা।

বক্তব্য রাখছেন চিত্তরঞ্জন সাহার স্ত্রী শ্রীমতি বিজলি প্রভাস সাহা
বক্তব্য রাখছেন চিত্তরঞ্জন সাহার স্ত্রী শ্রীমতি বিজলি প্রভাস সাহা

বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি  মোঃ আরিফ হোসেন, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, অমিকন গ্রুপের চেয়ারম্যান, জ্ঞান ও সৃজনশীল পুস্তক প্রকাশক বিক্রেতা সমিতির আন্তজার্তিক পরিচালক, বাংলাপ্রকাশের প্রকাশক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান, কামরুল হাসান শায়ক, মিলন নাথ, ফরিদ আহমেদ, সুভাস সিংহ রায়, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, জহরলাল সাহা, ওসমান গনি, রামেন্দু মজুমদার, অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, মহিউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

ইমিরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বায়ান্নর ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানোর জন্য বাংলা একাডেমী ১৯৬১-১৯৭০ সাল পর্যন্ত ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখে ১ দিনের জন্য ভাষা শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করত। পরে ১৯৭১-১৯৮২ সাল পর্যন্ত ৭ দিনের জন্য তা বাড়ানো হয়। ১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে ১৪ দিনের জন্য, ১৯৮৬-১৯৯১ সাল পর্যন্ত ৩ সপ্তাহব্যাপী এই অনুষ্ঠান হয়। ১৯৯২ সাল থেকে বাংলা একাডেমীর অনুষ্ঠান ২১ দিনের স্থলে মাসব্যাপী আয়োজন করা হয়।
55
সভায় প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বলেন, আমি একজন নবীন প্রকাশক হিসেবে যতটুকু জেনেছি তাতে সৃজনশীল সাহিত্যের অগ্রপথিক এবং প্রকাশনা শিল্পের অগ্রদূত ছিলেন প্রয়াত চিত্তরঞ্জন সাহা। তিনি আজকের  অমর একুশের বইমেলার’ও প্রবর্তক । ওনার অবদান প্রকাশকরা কোন দিন শোধ করতে পারবেন না। উনি বেঁচে থাকলে আমি সৌভাগ্যবান হতাম। তবে আজকে একটি কথা না বললেই নয়; তাহচ্ছে প্রকাশনা শিল্পের অগ্রগতি বিরোধী ১৯৮০ সালের কালো আইনটি যাতে বাতিল করা যায় সেলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ঠ সকল সমিতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে প্রকাশনা সেক্টরকে বাঁচাতে হবে এবং চিত্তরঞ্জন সাহার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রকাশনাকে শিল্পের মর্যাদা দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমি আমার বাবার কাছে শুনেছি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চিত্তরঞ্জন সাহা সপরিবারে কলকাতা চলে যান এবং ওই বছরই সেখান থেকে আমাদের দেশের শিল্পী-সাহিত্যিকদের নিয়ে স্বাধীন বাংলা সাহিত্য পরিষদ গঠন করেন। ‘মুক্তধারার’ ব্যানারে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তাঁরা বই প্রকাশ করেন এবং স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালেই একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বাংলা একাডেমী আয়োজিত অনুষ্ঠানে সবুজ ঘাসের ওপর চট বিছিয়ে বই প্রদর্শন ও বিক্রির ব্যবস্থা করেন। এতে তিনি সাড়াও পেয়েছিলেন ভালো। পরের বছরেও একই সময় একই রকম আয়োজন করেন তিনি। ১৯৭৪ সাল থেকে একুশে বইমেলার প্রসার লাভ ঘটতে থাকে।

স্মরণসভায় বাপুস সভাপতি মোঃ আরিফ হোসেন ছোটন বলেন,  প্রকাশনা শিল্পের অগ্রগতি বিরোধী ১৯৮০ সালের কালো আইনটি সৃজনশীল ও অনুশীলনমূলক সহায়ক বই প্রকাশ ও বিক্রয় পরিপন্থী। দেশের শিক্ষা বিরোধী এই আইনটি করা হয়েছিল চিত্তসাহাসহ সকল প্রকাশকদের প্রকাশনার অগ্রগতি রোধ করার জন্যে। এই আইনে দেশের ২৮ হাজার বইয়ের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। ২৫ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়বে। এসব শিল্পে ব্যক্তিগত ও ব্যাংক খাতের হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে; যা ওই কালো আইন বাতিল না হলে বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। এছাড়া সহায়ক বই বন্ধ হলে ছাত্রছাত্রীরা কোচিং ও প্রাইভেট টিউটরের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।