• শনিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৪

খাগড়াছড়িতে শাসকদলে চাপাতি-আতংক


প্রকাশিত: ১২:৪০ পিএম, ২ এপ্রিল ১৬ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৩৪ বার

বিশেষ প্রতিনিধি/খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি : খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-Khagrachari chapati-www.jatirkhantha.com.bdসহিংতায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন শহরবাসী।পৌর নির্বাচনের পর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রুপ ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের সদস্যরা প্রতিনিয়ত প্রকাশ্যে সশস্ত্র মহড়া, পাল্টাপাল্টি মিছিল, চোরাগোপ্তা হামলা করছেন।

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জাতিরকন্ঠকে জানান, সহিংসতা থামাতে প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার পর পৌর শহরে সভা-সমাবেশ ও পাঁচজনের অধিক জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও থামছে না সহিংসতা।তবে শহরবাসীরা অভিযোগ, এতকিছুর পরও ‘নির্বিকার’ প্রশাসন।

Khagrachari-2-www.jatirkhantha.com.bdগত পৌর নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার অনুসারীরা দলীয় প্রার্থী শানে আলমের পক্ষে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের সম্মিলিত নাগরিক কমিটি প্রার্থী রফিকুল আলমের পক্ষে নির্বাচন করেন। নির্বাচনে রফিকুল আলম নির্বাচিত হলে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব রূপ নেয় সংঘর্ষে।খাগড়াছড়ি সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, পৌর নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় সদর থানায় এ পর্যন্ত অন্তত দুই ডজন মামলা ও জিডি হয়েছে। তার মধ্যে শুধু মেয়র রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সদর থানায় ছয়টি জিডি হয়েছে।

সর্বশেষ ৩০ মার্চ খাগড়াছড়ির পৌর মেয়র মো. রফিকুল আলমের বিরুদ্ধে প্রাণনাশের অভিযোগ এনে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন স্থানীয় রাপ্রুচাই চৌধুরী নামক এক যুবক। এর আগে ২৮ মার্চ রাতে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগে সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী, ২৯ মার্চ সকালে সদ্য শেষ হওয়া পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থ শানে আলম মেয়রের বিরুদ্ধে জিডি করেন। জিডি করেছেন স্থানীয় দুই সাংবাদিক।
থানা সূত্রটি আরো জানায়, পৌরসভা নির্বাচনের পরে সহিংসতায় তিন মাসে দুই গ্রুপের হামলা পাল্টাহামলায় অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ একে অপরকে দুষছে।

জেলা আওয়ামী লীগ ২১ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য জাহেদুল আলম ও তার ছোট ভাই মেয়র মো. রফিকুল আলমকে দায়ী করেন। সেদিন রাতেই জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন খানের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা হয়। মনিরের অভিযোগ, মেয়র পক্ষের লোকেরাই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে।

পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল আলম বলেন, ‘গত পৌরসভা নির্বাচনে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ায় তিনি সন্ত্রাসীদের দিয়ে জনগণের ওপর হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছেন। হামলার পর মামলা দিয়ে আমাকে আর আমার কর্মী-সমর্থকদের হয়রানি করছেন। হামলা থেকে পৌরসভা ভবন রক্ষা পাচ্ছে না।’

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রণ বিক্রম ত্রিপুরা বলেন, ‘জাহেদুল আলম অতীতের ন্যায় দলের সিদ্ধান্তে বিরোধিতা করায় বহিষ্কৃত হয়ে এখন আবার জোর করে দলে ফিরতে চাইছে। তার ছোট ভাই মেয়র রফিকুল আলম ও দিদারুল আলমকে দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা চালাচ্ছে।’রণ-বিক্রম হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘অতীতে নানা অন্যায় করেও দলে ফিরেছিলেন জাহেদুল, এবার আর সে সুযোগ নেই।’

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সামসুউদ্দীন ভূঁইয়া জাতিরকন্ঠকে বলেন, ‘প্রতিপক্ষকে নানাভাবে ঘায়েল করতে মামলা-মোকাদ্দমা চলছে। মূলত তিন-চারজন অপরাধ করলেও মামলা দেওয়া হচ্ছে ১৫-২০ জনের।’শহরবাসীর অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুলিশ নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে। তাদের জানমালের নিরাপত্তায় সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে।’