• শুক্রবার , ২৬ এপ্রিল ২০২৪

এতিমদের স্বপ্ন পূরণ করলো বিমান


প্রকাশিত: ৫:৫২ এএম, ২৮ মে ১৭ , রোববার

নিউজটি পড়া হয়েছে ১৩৩ বার

বিশেষ প্রতিনিধি :  এতিমদের স্বপ্ন পূরণ করলো বিমান। শনিবার ঢাকা থেকে সিলেটগামী বিজি ১৬০৫ ফ্লাইটে ১১৫ Atem biman-www.jatirkhantha.com.bd.3জন যাত্রীর মধ্যে ৩০ জন শিশু কিশোর ভ্রমণ করেছে। না, তারা কোন উচ্চবিত্ত পরিবারের সদস্য নয়। অনাথ, সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য সমাজ সেবা অধিদফতেরর সরকারি শিশু পরিবারের (নিবাস) সদস্য তারা। তবে সেই ফ্লাইটে তারাই ছিল বিশেষ কেউ। এ শিশু কিশোররা  যখন উড়োজাহাজে, তখন ককপিট থেকে ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইউম তাদের স্বাগত জানান।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারল্ইান্সের আয়োজনে মিরপুর ও তেজগাঁও শিশু পরিবারের সুবিধা বঞ্চিত শিশু কিশোরদের উড়োজাহাজে ভ্রমণ ও ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়। তবে এই ভ্রমণ শুধুই বিনোদন ছিল না, এই ভ্রমণে নতুন করে তারা দেখেছে তাদের স্বপ্ন, স্থির করেছে লক্ষ্য।

এ আয়োজন প্রসঙ্গে বিমানের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সুবিধাবঞ্চিত শিশু কিশোরদের জন্য ব্যতিক্রম এই আয়োজন করেছে। বিমানের রয়েছে মজবুত ও স্থায়ী  সামাজিক দায়বদ্ধতা বোধ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিমান সামাজিক উন্নয়নে অংশীদারিত্ব রেখেছে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই।
Atem biman-www.jatirkhantha.com.bd.1
সিেেলট যাওয়ার পথে বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ ময়ুরপঙ্খী’র জানালা দিয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে অবাক বিস্ময়ে চেয়ে দেখে শিশু কিশোররেরা। বিমানে চড়ে পুলকিত ও আনন্দ প্রকাশ করে তারা।

মিরপুর সরকারী শিশু পরিবারের মো. সোহেল রানা বলেন, আমি কোন দিন ভাবতে পারিনি, বিমানে চড়বো। এই ভ্রমণ আমার কাছে স্বপ্নের মতো হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র মেহেদী হাসান বলেন, উড়োজাহাজের উপরেও মেঘ, নিচেও মেঘ আর আমি এর মধ্যে উড়োজাহাজে রয়েছি।Atem biman-www.jatirkhantha.com.bd

স্বপ্নের কথা জানিয়ে মেহেদী হাসান আরও বলেন, আমি পাইলট হবো।  কিন্তু মেহেদীর আগে পাইলট হবার স্বপ্ন ছিলো না। লেখা পড়া শেষ করে চাকরি করার স্বপ্ন ছিলো তার। ৯ম শ্রেণির ছাত্রী তাহমিনা রচনা বলেন, আজকের দিনটি আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন। বিমানকে এ আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ।

সিলেটে ওসামানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর পাইলট নওশাদ আতাউল কাইউম ককপিট থেকে এসে শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন ও ছবি তুলেন। সিলেটে শিশু কিশোররা পর্যটন মোটেল, লাক্কাতুরা চা বাগান ও হজরত শাহজালাল (রা.) মাজার পরির্দশন করেন। সিলেটে ভ্রমণ শেষে দুপুরে বিজি ০০২ ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরেন।

বিমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে তেজগাঁও শিশু পরিবারের উপ-তত্ত্ববধায়ক ঝর্ণা জাহিন বলেন, আমাদের শিশু পরিবারের উপর দিয়ে উড়োজাহাজ উড়ে যায়, তখন শিশুরা ছুটে গিয়ে উড়োজাহাজ দেখে। আমি কোন দিন ভাবতে পারিনি তাদের বিমানে চড়াতে পারবো। তিনি আরও বলেন, আজকে এ ভ্রমণে তাদের স্বপ্ন বদলে গেছে। কোন কোন মেয়েরা আমার কাছে এসে বলছে তারা পাইলট, কেবিন ক্রু হতে চায়। আমি তাদের স্বপ্ন বদল দেখে আনন্দিত।

বিমানে প্রধান কার্যালয়ে সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশু কিশোরদের হাতে  ঈদের পোষাক তুলে দেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ। তিনি শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের উদ্দেশ্যে মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন,আমরা চাই তোমরা সফল হও, তোমরা নিজেরাই নিজেদের খরচে বিমানে চড়ার সক্ষমতা অর্জন করো।

আয়োজন প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন, শিশুদের নিয়ে আয়োজন নিছক বিমান ভ্রমণ নয়, এটা তাদের জন্য অনুপ্রেরণা। জীবনের সফল ও সঠিক লক্ষ্যে পৌছানোর জন্য আমরা তাদের অনুপ্রাণিত করছি।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, শিশুরাই আগামীর ভবিষৎ, তাদের উন্নয়ন ছাড়া  কোন  অগ্রযাত্রা সফল হবে না। মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি সেই মুনাফার একটা অংশ বৃহত্তর সমাজের কল্যাণে বিনিয়োগ করা জন্য ’কর্পোরেট সোস্যাল রেসপনসিবিলিটি’র আওতায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যা দেশের উন্নয়নধারাকে মজবুত ও টেকসই করতে সহায়ক।