• শুক্রবার , ২৯ মার্চ ২০২৪

আর্মিরা গনধর্ষণ করে রোহিঙ্গা সুন্দরীদের


প্রকাশিত: ৮:৪৩ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ১৭ , শনিবার

নিউজটি পড়া হয়েছে ৬৮ বার

ডেস্ক রিপোর্টার :  মিয়ানমারে সহিংসতা শুরুর পর থেকে এখনও পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। বনে-জঙ্গলে rohingya-www.jatirkhantha.com.bdলুকিয়ে যারা বাঁচতে পেরেছেন তারাই এখন আসছেন বলেই জানাচ্ছেন আশ্রয়প্রার্থী নারী-পুরুষরা। আগের মতো-ভীতসন্ত্রস্ত মানুষের ঢল এখন না থাকলেও রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ আর শিশুরা আসছে ছোট ছোট দলে।

এদের বেশির ভাগই হারিয়েছেন পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য। নিজেরাও কেউ কেউ বর্বর নির্যাতনের শিকার। টেকনাফে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা শাহপরীর দ্বীপে কথা হয় মংডুর ২০ বছর বয়সী আসমার (ছদ্মনাম) সঙ্গে। মঙ্গলবার পনের জনের একটি দলে বাংলাদেশে ঢুকেছেন আসমা।

আসমা জানান, মিয়ানমারে সেনাসদস্যরা তার স্বামী ও ভাইকে হত্যা করে আর তার ওপর চালায় পাশবিক নির্যাতন।
তার বক্তব্য, ১০-১২ জন সৈন্য মিলে আমাকে ধর্ষণ করে, কি যে কষ্ট, সহ্য করতে পারছিলাম না। ওদের অত্যাচারে অনেক মেয়ে মরে গেছে। আমাকেও যখন মেরে ফেলতে চাইল, তখন বাচ্চা দু’টোকে দেখিয়ে ওদের পা জড়িয়ে ধরে প্রাণ ভিক্ষা চাইলাম। বললাম, কাউকে বলব না বার্মায় কী হয়েছে, বাংলাদেশে চলে যাব এখুনি।’

কাকুতি-মিনতি আর ছোট্ট দুটি বাচ্চা দেখিয়ে ছাড়া পেয়ে ১৫ দিন জঙ্গলে কাটান আসমা। সঙ্গে ১২ বছর বয়সী ছোট ভাই আর দুই সন্তান। কিন্তু বাংলাদেশে প্রবেশের চার দিন আগে অসুস্থ হয়ে পথেই মারা গেছে তার চার বছর বয়সী বড় ছেলেটি। এক সন্তান আর ভাইকে নিয়ে বহু কষ্টে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন বলে জানান তিনি। হাঁটতে হাঁটতে পা ফুলে গেছে। এ দেশে এসে যে সাহায্য পেয়েছি, নিজের দেশে তা পাইনি। বার্মার অন্য সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাদের বলে, সে দেশ শুধু তাদের, মুসলমানদের নয়।

মংডুর আরেক অধিবাসী রফেকা বলছিলেন, তার স্বামীর গলা কেটে ফেলেছে সেখানকার অমুসলিম সম্প্রদায়ের অস্ত্রধারীরা। আর তার ভাইয়ের স্ত্রীকে ধর্ষণের পর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেটে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।তিনি দুই সন্তান নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। রাখাইন থেকে তরুণী মেয়েরা অনেকেই আসতে পারেনি বলেও জানান রফেকা।

প্রতিদিনই ধরপাকড় চলে, সুন্দরী মেয়েদের তুলে নিয়ে জুলুম করে মিলিটারিরা। তারপর হাত-পা, বুক কেটে ফেলে দেয়। অত্যাচারের কারণে বছরখানেক আগে অন্য গ্রামে আশ্রয় নিয়েছিল রফেকার পরিবার। রফেকা জানান, আসার আগে কয়েকদিন তারা দিনের বেলায় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতেন আর রাতে বাড়িতে যেতেন। রফেকা জানান, অত্যাচার ও সহিংসতার মাত্রা এতটাই ভয়াবহ পর্যায়ে গিয়েছিল যে গ্রামের সবাই যে যেদিকে পেরেছে পালিয়েছে।

তিনি বলেন, মগরা আমাদের প্রতিনিয়ত জ্বালায়। বাড়িতে হানা দেয়। পুরুষদের ধরে নিয়ে যায়। মেয়েদের ধরে নিয়ে যায়, অত্যাচার-জুলুম করে। আমার ভাবীকে গুলি করে মেরে ফেলেছে। মেরে ফেলার আগে তাকে জুলুম করে (ধর্ষণ) মগ মিলিটারিরা। হাত-পা কেটে ফেলে। স্বামী হারানোর পর দুই সন্তান নিয়ে আট দিন হেঁটে বাংলাদেশে ঢুকেছেন রফেকা। বাংলাদেশে আসা বেশিরভাগ নারীর অভিজ্ঞতা প্রায় একই রকম। জাতিসংঘের হিসেবে গত কয়েক সপ্তাহে চার লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগই নারী ও শিশু।